সংক্রমণ কমা মাত্রই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে : ছিদ্দিকুর রহমান

দৈনিক শিক্ষা ডেস্ক |

করোনায় শিক্ষা খাতের ক্ষতির বিষয়টি খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা জরুরি। এ ব্যাপারে আমার সুনির্দিষ্ট কয়েকটি প্রস্তাব আছে।

১. করোনা সংক্রমণ কমা মাত্রই স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজ খুলে দিতে হবে। 'ফেস টু ফেস' শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তবে শিক্ষার্থীদের একটি অংশকে একদিন আর অন্য অংশকে আরেক দিন ক্লাস করানো যাবে না। একই ক্লাসের শিক্ষার্থীদের দুই ভাগ করা যাবে না। ডাবল শিফটে ক্লাস পরিচালনা করতে হবে। অন্যথায় কোর্স শেষ হবে না।

২. শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থী সবাইকে ভ্যাকসিন দিতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভ্যাকসিন দিলে ৯০ ভাগের দেহেই অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ভ্যাকসিন দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে হবে। প্রতিষ্ঠান খোলার যে কোনো নূ্যনতম সুযোগও আমাদের গ্রহণ করতে হবে।

আরও পড়ুন :  দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা

৩. সবাইকে ভ্যাকসিন এখনই দেওয়া সম্ভব না হলে কিংবা করোনা সংক্রমণও না কমলে অনলাইন শিক্ষাদান আরও জোরদার করতে হবে। ডিভাইস সংকট, ইন্টারনেট সংযোগ না থাকা, দারিদ্র্যসহ নানা সমস্যা ছাত্রদের আছে। সরকারিভাবে এসবের ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে প্রতিটি এলাকায় নির্দিষ্ট স্থানে ওয়াইফাই জোন তৈরি করে শিক্ষার্থীদের ফ্রি ইন্টারনেট দিতে হবে। ডাটা কেনার সামর্থ্য না থাকা অভিভাবকদের সাপোর্ট দিতে হবে। অনলাইন ক্লাসগুলো অবশ্যই আনন্দদায়ক হতে হবে।

৪. দূরশিক্ষণ চালু করতে হবে। তবে নিচের ক্লাসে দূরশিক্ষণ কার্যকর নয়। ওপরের ক্লাসগুলোতে দূরশিক্ষণে সহজ-সরল ভাষায় ও ছবি ব্যবহার করে ছোট ছোট মডিউল তৈরি করতে হবে। তা শিক্ষার্থীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতে হবে। এ জন্য সরকারি বিনিয়োগ প্রয়োজন। শিক্ষার্থীদেরও দূরশিক্ষণের জন্য মানসিকভাবে তৈরি থাকতে হবে। না হলে তা কোনো কাজে আসবে না। 

৫. ছাত্রছাত্রীরা দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বিচ্ছিন্ন থাকলে তাদের জীবনধারা বদলে যায়। পড়াশোনায় আর মন বসে না। অনেক মেয়ের বিয়ে হয়ে যায়। ড্রপ আউট বাড়ে, অপুষ্টি বাড়ে। এই শিক্ষার্থীদের ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনাও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে। এ ব্যাপারে অভিভাবক ও শিক্ষকদের সবিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। পাঠাভ্যাস ধরে রাখতে অভিভাবকরা সন্তানদের শুধু পাঠ্যবই পড়ার জন্য চাপ না দিয়ে গল্পের বই, ভ্রমণ কাহিনি, মনীষীদের জীবনীসহ যে কোনো ভালো বই কিনে দিতে হবে যেন তারা আনন্দের সঙ্গে সেগুলো পড়তে পারে।

লেখক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক এবং জাতীয় শিক্ষানীতি প্রণয়ন কমিটির সাবেক সদস্য

দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন

সূত্র : ১৩ জুলাই, দৈনিক সমকাল


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha প্রাথমিকে ১০ হাজার শিক্ষক নিয়োগ জুনের মধ্যে: প্রতিমন্ত্রী পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের - dainik shiksha পূর্ণাঙ্গ উৎসব ভাতা দাবি মাধ্যমিকের শিক্ষকদের ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার - dainik shiksha ঝরে পড়াদের ক্লাসে ফেরাতে কাজ করছে সরকার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার - dainik shiksha প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, ভাইবোন গ্রেফতার ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি - dainik shiksha ভিকারুননিসায় ৩৬ ছাত্রী ভর্তিতে অভিনব জালিয়াতি শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন প্রায় শূন্যের কোটায় ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে - dainik shiksha ‘চার আনা’ উৎসব ভাতা: প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী সমীপে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029699802398682