সন্তানের স্বীকৃতি চেয়ে জাবি শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারীর অভিযোগ

জাবি প্রতিনিধি |

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় পক্ষের এক সন্তানকে সামাজিক স্বীকৃতি না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল। 

রোববার (২৯ জানুয়ারি) মেহেদী ইকবালের দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা আক্তার উপাচার্য বরাবর তাঁর পূর্ণাঙ্গ সামাজিক স্বীকৃতির দাবি করেন।

অভিযোগপত্রে ওই নারী উল্লেখ করেন, মেহেদী ইকবালের সঙ্গে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে তাঁর প্রথম বিয়ে হয়। সাত মাস বৈবাহিক সম্পর্ক ঠিক থাকলেও পরে তালাক দেন মেহেদী।

পরবর্তীতে পূর্ণাঙ্গ সামাজিক স্বীকৃতির শর্তে ২০২১  সালের জুনে পুনরায় বিবাহ হয় এবং একটি পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। যার বর্তমান বয়স প্রায় ১৫ মাস। তবে সন্তানের মৌখিক ও কাগজে স্বীকৃতি দিলেও প্রকাশ্যে সামাজিক স্বীকৃতি জানাতে এবং একসঙ্গে বসবাস করতে অনীহা প্রকাশ করেন এই অধ্যাপক। 

সেলিনা আক্তার দাবি করেন, এর আগে প্রথম বিয়ের সামাজিক স্বীকৃতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ প্রদান করলে পূর্ণাঙ্গ সামাজিক স্বীকৃতির দেওয়ার শর্তে মেহেদী ইকবাল দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন তাঁকে। পরে প্রথমবারের অভিযোগপত্রটি উত্তোলন করলেও সমাধান না করায় দ্বিতীয়বারের মতো অভিযোগপত্র দিতে হলো তাঁকে। 

উপাচার্যের কাছে অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার পর সেলিনা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি পুনরায় চার মাসের গর্ভবতী। মেহেদী এখন আমাদের সঙ্গে ঠিকঠাক যোগাযোগ করে না। আমার ছেলেটির কয়েক দিন ধরে ১০৩ ডিগ্রির বেশি জ্বর। মেহেদীকে অনবরত কল এবং মেসেজ দিয়ে যাচ্ছি, কিন্তু সে কোনো যোগাযোগ করছে না।’ 

তিনি আরও বলেন, ‘সে মাসে আমাদের ৩-৪ ঘণ্টা সময় দেয়। ভরণপোষণ সে দিচ্ছে কিন্তু পর্যাপ্ত নয়। এখনো দুই মাসের ঘরভাড়া বাকি। সে কেন এমন আচরণ করতেছে জানতে চাইলে সে কোনো উত্তর দেয় না। বিয়ের সময় জানতাম না সে বিবাহিত, পরে জেনেছি। দুইটা বিয়ে অনেকে করে, আমি সমান অধিকার চাই।’ 

ওই নারী আরও বলেন, ‘দিন শেষে আমি একজন মা। আমার বাচ্চার ভবিষ্যৎ আমাকেই দেখতে হবে। পিতা হিসেবে সে কোনো দায়িত্বই পালন করছে না। আমি আমার চিন্তা করছি না। বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত। আমি অনেকভাবে মেহেদিকে বুঝাইছি এর একটা সমাধানে বসি সে কোনোভাবে রাজি না। সে আসলে কি চায় তা জানি না। সে আমাকে রাখবে কি রাখবে না সেটাও জানি না। যদি না রাখে সেটাও আমাকে বলুক। সে কিছুই বলে না। আমার এবং বাচ্চার পূর্ণাঙ্গ অধিকার চাই, দিতে হবে।’ 

এ বিষয়ে জানতে সেলিনা আক্তারের স্বামী ও ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মেহেদী ইকবালের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি। 

তবে মেহেদি ইকবালের প্রথম স্ত্রী বলেন, ‘মেহেদি ইকবালকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই ওই নারী এই কাজ করে যাচ্ছেন। এর আগেও তিনি এ রকম অভিযোগ এনেছিলেন। পরে একদিন পর তা প্রত্যাহারও করে নিয়েছিলেন। তার অভিযোগের যদি কোনো সত্যতা থাকে তাহলে সে আমার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের সঙ্গে বসে বিষয়টা সমাধান করুক। এভাবে বারবার অপমান করার কোনো মানে নেই।’ 

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নূরুল আলম বলেন, ‘অভিযোগপত্র পেয়েছি, তবে এ বিষয়টি নিয়ে আমি তেমন কিছু বলতে চাই না। আমি চাই, তারা সমস্যাটি পারিবারিকভাবে সমাধান করুক।’ 

উল্লেখ্য, এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে প্রথম স্ত্রীর ঘরের ১০ বছরের সন্তানকে দিয়ে গাড়ি চালিয়ে শৃঙ্খলা আইন ভাঙার অভিযোগে এই শিক্ষককে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা - dainik shiksha পেছালো জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষের পরীক্ষা প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ - dainik shiksha প্রশ্নফাঁসের মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড, খালাস ১১৪ শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা - dainik shiksha শিক্ষা ভবনের সেই বিপুলকে বদলি, গ্রেফতার চান এমপিও শিক্ষকরা পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি - dainik shiksha পলাতক ফাহিমার ক্যাশিয়ার কামালকে গ্রেফতারের দাবি দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি - dainik shiksha দীপু মনির ক্যাশিয়ার পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমাকে বদলি ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস - dainik shiksha ঢাকা কলেজের নতুন অধ্যক্ষ অধ্যাপক ইলিয়াস রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা - dainik shiksha রাষ্ট্র পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা চাইলেন প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না - dainik shiksha শিক্ষা কমিশন কেনো হলো না ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে - dainik shiksha ১৫ এলাকায় ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড় হতে পারে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যায় ক্ষতির পরিমাণ ও সবুজায়নের তথ্য আহ্বান please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031790733337402