ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, নিরাপত্তা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডিবি হেফাজতে নেয়া কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়কদের দ্রুত ছেড়ে দেয়া হবে। এছাড়াও আন্দোলন বন্ধে গতকাল সমন্বয়করা যে বিবৃতি দিয়েছে সেটি জোর করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। যারা এই গুজবটি ছড়িয়েছেন তাদের প্রতি অনুরোধ গুজব ছড়াবেন না।
সোমবার (২৯ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর মিন্টু রোডের ডিবি কার্যালয়ের সামনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হারুন আর রশীদ এসব বলেন।
তিনি বলেছেন, ডিবি একটি আস্থার জায়গা। সেখানে কাউকে আটকে রাখা হয় না। জোর করে বিবৃতি নেওয়া হয় না। তারা বরং অনুভব করেছে সরকার তো সব দাবি মেনেই নিয়েছে।
ডিবি প্রধান বলেন, আমরাও তো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, ছাত্র ছিলাম। এই ছয় সমন্বয়ক যাদেরকে নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা এখানে এনেছি। তারা আমাদের সঙ্গে আছে। এই সমন্বয়কারীদের ঘিরে অনেক গুজব চলছে। আমরা তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাদের পরিবার ও সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা নিয়ে আসছি। ইতোমধ্যে আজকে ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়কের পরিবার কিন্তু বলেছে ওরা ভাল আছে। ওদের পরিবার কিন্তু কাল রাতে এসেছিল। আজকেও ডিবিতে এসেছেন। তারা নিজেরাও দেখেছেন ওরা কেমন আছে। তাদের পরিবারের লোকজন গণমাধ্যমে কথাও বলেছেন।
তিনি বলেন, পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আমরা মনে করি যদি কোনো ব্যক্তি নিরাপত্তাহীনতা বোধ করেন, আমাদের কাছে আসেন তাহলে আমাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তাদের দেখভাল করা। সেটাই আমরা করছি।
হারুন অর রশীদ বলেন, ইতোমধ্যে তারা একটা বিবৃতিও দিয়েছে যে, কোটা সংস্কার আন্দোলনের সঙ্গে তারা আর নেই। গতকাল রাত থেকে আমরা গুজব ছড়াতে দেখছি তারা স্বেচ্ছায় বিবৃতি দেয়নি। আমরা মনে করি, ডিবি কার্যালয় হচ্ছে মানুষের আস্থার জায়গা। এখানে মানুষকে হেনস্থা করা বা কারো প্রতি অন্যায় আচরণ করা, সেটা কখনোই ডিবি করে না, ভবিষ্যতেও করবে না।
পরিবার তো ডিবির ভেতরে আছে। ডিবি হেফাজতে থাকা ছয় সমন্বয়ককে তবে তাদের জিম্মায় ছেড়ে দেবেন কি-না? কারণ গতকালও পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে তাদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হয়নি। এমন প্রশ্নের জবাবে হারুন বলেন, এটা ঠিক নয়, গতকাল রাতেও পরিবারের লোকজন ডিবিতে এসেছে, দেখা করেছে। আজও দেখা করেছে, কথা বলেছে, সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে। ওরা যে ভাল আছে সেজন্য ধন্যবাদ দিয়েছে।
আপনারা জানেন, এই কোটা সংস্কার আন্দোলনটা করেছিল কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তাদের ভেতরে ঢুকে একটি গোষ্ঠী ধ্বংসাত্মকমূলক কাজ করেছে। পুলিশ সদস্যকে ঝুলিয়ে হত্যা, মানুষ হত্যা করেছে। রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোতে আগুন লাগিয়েছে। আমরা মনে করি, যদি আবার চক্রান্তকারীরা ঘোলা পানিতে মাছ ধরার চেষ্টা করে তাহলে, এই সমন্বয়কদের নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হতে পারে। সেজন্য তাদের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের দেখা দরকার।
আর কতদিন তাদের ডিবি হেফাজতে রাখা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তাদের ও তাদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলছি। খুব দ্রুত তারা পরিবারের কাছে চলে যাবে।