পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার আদলে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এতে শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকদের দুর্ভোগ অনেকটাই লাঘব হবে। আর্থিকভাবে অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে। অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে যারা মেধাবী কিন্তু অর্থের অভাবে একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ফরম ওঠাতে পারে না এবং দূরের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে যেতে পারে না—তাদের আশার আলো দেখাবে এ সিদ্ধান্ত। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা যায়।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হলে তারা ভর্তি পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ পেয়ে তাদের মেধা যাচাইয়ের সুযোগ পাবে। এর ফলে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য কমবে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, এই সিদ্ধান্তে আমিসহ অনেক ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী বিশেষ করে বিভাগ পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীরা হতাশ। ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে যে পদ্ধতির কথা বলেছে সেটা হলো শুধু বিজ্ঞান, মানবিক এবং ব্যবসায় শিক্ষা এই তিনটি ইউনিট করে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এটা বিভাগ পরিবর্তনকারী শিক্ষার্থীদের জন্য একধরনের অবিচার।
যেসব শিক্ষার্থী দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার জন্য স্বপ্ন দেখে, তারা তাদের কলেজজীবনের শুরু থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করে। এতদিন প্রস্তুতি নেওয়ার পর যদি পরীক্ষার পূর্ব মুহূর্তে এসে এইরকম সিদ্ধান্তের কথা শোনে, তবে তাদের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়াটাই স্বাভাবিক। তারা যে আন্দোলনে নেমেছেন এটাও স্বাভাবিক। শিক্ষার্থীদের দাবি, বিভাগ পরিবর্তনের ইউনিট বজায় রেখে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক। তাদের এ দাবি যৌক্তিক। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এটাও ভালো সিদ্ধান্ত, তবে সেজন্য দুই বছর সময় দিতে পারতেন শিক্ষার্থীদের।
যে পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলা হয়েছে সেটা এ বছর থেকে কার্যকর না করে কর্তৃপক্ষ এভাবে ঘোষণা করতে পারতেন, আগামী ২০২৩-২৪ সেশন থেকে বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট বিলুপ্ত করে শুধু স্ব-স্ব বিভাগের ইউনিট পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এতে করে শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘবের সঙ্গে সঙ্গে লাঘব হতো মানসিক চাপ, থাকতে পারত উত্কণ্ঠামুক্ত। পরিশেষে, শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি বিবেচনা করে এবং বিভাগ পরিবর্তন ইউনিট বজায় রেখে এবারের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হোক।
মো. শফিউল্লাহ, শিক্ষার্থী, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া