আদিবাসীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে সমাবেশ ও মিছিল করবে বলে জানিয়েছে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ।
রোববার (১৪ জুলাই) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য শেষে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক অলিক মৃ এ ঘোষণা দেন।
অলিক মৃ বলেন, সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহালের দাবিতে আগামী ১৬ জুলাই বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ ও মিছিল করবে আদিবাসী কোটা সংরক্ষণ পরিষদ।
তিনি বলেন, আদিবাসীরা এখনও নাগরিক হিসেবে যথাযথ সুযোগ সুবিধা পায় না। অনগ্রসর জাতি হিসেবে কাদের বুঝানো হবে সেটি নিয়ে অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। কোটা বাতিল হওয়ার পরও সমপর্যায়ে না আসা পর্যন্ত আদিবাসীদের জন্য সরকারি চাকরিতে বিশেষ ব্যবস্থার কথা বলা হয়েছিল। তার ফলাফল আমরা এখনো পাইনি।
অলিক মৃ বলেন, কোটা বাতিল হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৫৭ জন আদিবাসী সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েছিল। আর ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে কোটা আন্দোলনের পর যখন কোটা বাতিল করা হলো তখন থেকে এখন পর্যন্ত ৯৯ জন আদিবাসী উত্তীর্ণ হলেও মাত্র ৪ জন সুপারিশপ্রাপ্ত হয়। এ ধারাবাহিকতা চলতে থাকলে আদিবাসীদের অস্তিত্ব থাকবে না।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের মাধ্যমে দারিদ্র্য ও অসমতা রাষ্ট্রে প্রান্তিক ও অনগ্রসরগোষ্ঠীর জীবনমানের উন্নত পরিকল্পনায় যদি আদিবাসীদের জন্য ৫ শতাংশ কোটা না রাখা হয় তাহলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সম্ভব হবে না। আদিবাসীরা আরও পিছিয়ে যাবে। এতে অসমতা তৈরি হবে।
তিনি বলেন, ৫ শতাংশ কোটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার, তাই এটা পুনর্বহালের দাবি জানাই। আমরা কোটা আন্দোলনের বিপক্ষে না, তবে সামগ্রিক ৫ শতাংশ কোটায় আদিবাসীরা বৈষম্যের শিকার। তাই আমরা আদিবাসীদের জন্য ন্যূনতম ৫ শতাংশ কোটা বহাল রাখার দাবি জানাচ্ছি।
এ সময় সরকারের নিকট তিন দফা দাবি পেশ করে অলিক মৃ বলেন, আদিবাসী জনগোষ্ঠীর কোটা বিলুপ্তি এখনই উপযুক্ত সময় নয়। বরং আদিবাসীদের জন্য সমতা বজায় রাখতে ৫ শতাংশ কোটা বহাল রাখা যৌক্তিক বিবেচনায় সরকারের নিকট ৩ দফা দাবি পেশ করলাম।
এক, প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে আদিবাসীদের ৫ শতাংশ কোটা পুনর্বহাল করতে হবে।
দুই, পুনর্বহালকৃত ৫ শতাংশ কোটা পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য আদিবাসী জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে অনগ্রসর ও অধিকতর অনগ্রসর জাতিসমূহকে চিহ্নিত করতে হবে এবং ৫ শতাংশ কোটা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এ সুবিধার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তিন, আদিবাসী এলাকায় মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত ও শিক্ষা অবকাঠামো নির্মাণ এবং শিক্ষক সংকট নির্মূল করতে হবে।