সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়তে থাকায় বাংলাদেশসহ নিচু উপকূলীয় এলাকা ও ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলোর প্রায় ৯০ কোটি মানুষ ঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছেন জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে মঙ্গলবার দেওয়া এক বক্তব্যে এ সতর্কবার্তা দেন জাতিসংঘ মহাসচিব। এ অবস্থা মোকাবিলায় আইনি কাঠামো বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে তিনি।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘বাংলাদেশ, ভারত, চীন ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলোর পাশাপাশি হুমকিতে আছে বুয়েন্স আয়ারস, কায়রো, জাকার্তা, লন্ডন, লস অ্যাঞ্জেলেস, মুম্বাই, নিউ ইয়র্ক, ব্যাংকক, কোপেনহেগেন ও সাংহাইয়ের মতো বড় শহরগুলো।’
জাতিসংঘ মহাসচিবের মতে, আসন্ন এই বিপদ নিঃশ্বাস ফেলছে পৃথিবীতে বাসকারী প্রতি দশ জনের একজনের ঘাড়ে। এ সংকট কেবল নিম্নাঞ্চলের মানুষ পোহাবে না, প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে গোটা পৃথিবীর মানুষ বিপদে পড়বে।
জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত জাতিসংঘের আন্তঃসরকার প্যানেল (আইপিসিসি) বলছে, ১৯০০ থেকে ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১৫-২৫ সেন্টিমিটার (৬-১০ ইঞ্চি) বেড়েছে।
আইপিসিসি বলছে, প্রাক-শিল্প যুগের তুলনায় যদি পৃথিবী কেবল ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস (৩.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট) উষ্ণ হয়, তবে ২১০০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সেই স্তর ৪৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পাবে। আর এটি যদি ৩ বা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস উষ্ণ হয়, তবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ৮৪ সেন্টিমিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে।
গুতেরেস সতর্ক করে বলেছেন, আইনি ও মানবাধিকার কাঠামোর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান করা উচিত।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির অর্থ হলো ভূমির ভর সঙ্কুচিত হওয়া। জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘এমনটা ঘটলে ভূমি এবং সমুদ্র নিয়ে বড় ধরনের বিরোধে জড়িয়ে পড়তে পারে বিশ্ব।
গুতেরেস বলেন, ‘বর্তমান আইনি ব্যবস্থাকে অবশ্যই ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে হবে। আন্তর্জাতিক শরণার্থী আইনসহ বিদ্যমান কাঠামোর মাধ্যমে সংকটের সমাধান করতে হবে।’
সূত্র: জাতিসংঘ