জলবায়ু পরিবর্তন। চলতি বিশ্বে এক ভয়ংকর দুর্দশার নাম। এবার এর প্রকোপে পড়েছে ব্যাংককের প্রান্ত থেকে ৬ মাইল দূরের একটি উপকূলীয় গ্রাম বান খুন সামুত চিন। সমুদ্রঘেরা ছোট গ্রামটিসহ গ্রামের স্কুলটিকেও ধীরে ধীরে গিলে খাচ্ছে সমুদ্রদানব। ভয়ে পালিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। বাকি আছে আর মাত্র চারজন।
এই চার শিশুই এখন উপকূলীয় এই জ্ঞানমন্দিরের শেষ সম্বল! স্কুলে পড়ুয়া ১১ বছর বয়সি জিরানান বলে, ‘আমি যখন কিন্ডারগার্টেন শুরু করি তখন আমার অনেক বন্ধু ছিল, সহপাঠী ছিল ২০ বা ২১ জনের মতো।’ কিন্তু সমুদ্রের আগ্রাসী ঢেউয়ের ভয়ে হারিয়ে যায় তার বন্ধুমহল। ফলে নিঃসঙ্গ জীবনের স্বাদ মেনে নিতে হয় জিরানানকে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হিমবহ ও বরফের শিট গলে যাওয়ায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যা উপকূলীয় সম্প্রদায়ের মাঝে কালো ভবিষ্যৎ নিয়ে আসে। আর কিছু দিন পর হয়তো এর কোনো নাম-গন্ধও থাকবে না পৃথিবীর মাটিতে। এমনি এক ভয়ংকার ভবিষ্যতের প্রহর গুনছে গ্রামটি। চার পাশেই সাগরের জল। রীতিমতো আটকে পড়েছে প্রাম ২০০ গ্রামবাসী।
গ্রাম প্রধান ইউসানু কেংসামুত বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, বিগত ৬০ বছরে ২ কিমি. জমি সমুদ্রে হারিয়ে গেছে। গত কয়েক বছর ধরে গ্রামটি ব্যাংককের চুলালাংকর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণা প্রকল্পের সাথে বাঁশ, কংক্রিটের স্তম্ভ স্থাপন ও সমুদ্রকে আটকে রাখার জন্য ম্যানগ্রোভ প্রতিস্থাপনের জন্য কাজ করছে। এই ব্যবস্থাগুলো প্রকৃতির শক্তিকে প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট নাও হতে পারে।
জাতিসংঘ জলবায়ু বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন, ১৯০০ সাল থেকে ভূপৃষ্ঠের উচ্চতা ইতোমধ্যে ৬ থেকে ১০ ইঞ্চি বেড়েছে। যার গতি প্রতিনিয়তই বাড়ছে। চলমান এ উষ্ণতা বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে শতাব্দীর শেষ দিকে প্রশান্ত ও ভারত মহাসাগরের চার পাশে উচ্চতা অতিরিক্ত এক মিটার বৃদ্ধি পেতে পারে। যা সরাসরি আঘাত হানবে থাইল্যান্ডের উপকূলে।
পৃথিবীকে বাসযোগ্য করতে একসঙ্গে কাজ করতে হবে-বার্বাডোস প্রধানমন্ত্রী : পৃথিবীকে বসবাসের উপযোগী করে তুলতে হলে সবার একসঙ্গে কাজ করতে হবে। ফ্রান্সে আয়োজিত একটি শীর্ষ সম্মেলনের সঙ্গে যুক্ত ইভেন্টে এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন বার্বাডোসের প্রধানমন্ত্রী মিয়া মোটলি। একটি নতুন বৈশ্বিক অর্থায়ন চুক্তিবিষয়ক আয়োজনটি শুরু হয় বৃহস্পতিবার। আয়োজনের উদ্দেশ্য, বিশ্বের দারিদ্র্যের অবসান ও বৈশ্বিক উষ্ণতা রোধে আন্তর্জাতিক লক্ষগুলোকে অর্থায়নের পুনর্বিবেচনা। সবার একসঙ্গে কাজ করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলগ্রহে বসবাসের পরিকল্পনা না থাকলে বসবাসের জন্য আমাদের শুধুমাত্র এই গ্রহটিই রয়েছে।’ সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বে জলবায়ু সংকট আমাদের নতুন বাস্তবতা।’ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় অর্থ সমন্বিত উপায়ে কাজে লাগানোর আহ্বান জানান তিনি।