মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় সব সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাক প্রতিবন্ধী মাকে রাস্তায় ফেলে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে সন্তানদের বিরুদ্ধে।
রোববার (৯ জুলাই) তেতুলবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। শনিবার (৮ জুলাই) সকালে উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পরে বৃদ্ধাকে প্রতিবেশীরা একটি ঝুপড়ি ঘরে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী মা হলেন, গাংনী উপজেলার কল্যাণপুর গ্রামের মৃত খেলাফত মোল্লার স্ত্রী সাহেরা খাতুন (৮০)। তার সংসারে রয়েছে পাঁচ মেয়ে ও তিন ছেলে।
প্রতিবেশীরা জানান, সাহেরার ছেলেরা কৌশলে পাঁচ বোনকে ফাঁকি দিয়ে সব সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন। এরপর থেকে তার ওপর নির্মম নির্যাতন শুরু করে ছেলেরা ও তাদের স্ত্রীরা। সম্পদ থেকে বঞ্চিত হওয়ায় মেয়েরাও খোঁজ নেন না মায়ের। কিন্তু অবশেষে বাক প্রতিবন্ধী মাকে রাস্তায় ফেলে গেছেন তারা।
স্থানীয় বাসন্দিা জামাল হোসেন জানান, মায়ের ভরণপোষণ ও খাওয়ানোর বিষয়ে তিন ভায়ের মধ্যে সমঝোতা হয়। প্রায় ১০ দিন করে একেক সন্তান মাকে খাওয়াবে ও যত্ন নেবে। কিন্তু কেউ সঠিকভাবে তা করেনি। সবশেষ মেজ ছেলের কাছে ছিল সাহেরা। শনিবার সকালে বৃদ্ধা সাহেরাকে বৃষ্টির মধ্যে রাস্তায় ফেলে যায় মেজ ছেলে ও তার স্ত্রী রুপিয়া খাতুন।
সাহেরা খাতুনের বড় ছেলে হকাজ্জেল জানান, আমরা তিন ভাই মিলে মাকে ১০ দিন করে বাড়িতে রাখি। দুই ভাই বিদেশ থাকে। তাদের স্ত্রীরাও আমার মাকে ১০ দিন করে রাখেন। আমার পালা শেষে মেজ ভাইয়ের বাড়িতে রাখা হয়েছিল। শনিবার সকালে আমার মাকে মেজ ভাইয়ের স্ত্রী রাস্তায় ফেলে এসেছে বলে প্রতিবেশীদের মুখে শুনেছি।
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল হোসেন জানান, সাহেরার বড় ছেলে হকাজ্জেল, মেজ ছেলে তুষার, ছোট ছেলে আবু হানিফ। মেজ ও ছোট ছেলে থাকেন বিদেশে। সাহেরার স্বামী মারা গেছেন প্রায় ২০ বছর আগে।
চেয়ারম্যান নাজমুল হুদা বিশ্বাস জানান, বৃদ্ধা সাহেরার সব ছেলের অবস্থা খুব ভালো। তারা পালাক্রমে মাকে দেখাশোনা করে। ছেলের স্ত্রীরা বৃদ্ধা সাহেরাকে অত্যাচার করে।
গাংনী থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।