মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থানের পর আরো কঠোর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে গত দুই দিন দাবি আদায়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থানে আছেন তারা। তবে, বুধবার রাতে সভা করে আরো কঠোর কর্মসূচি ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিটিএ। শিক্ষক সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতারা বলছেন, ৫ লাখ শিক্ষক সরকারিকরণের ঘোষণা নিয়ে তবেই তারা ক্লাসে ফিরবেন।
বুধবার রাত পৌনে এগারোটার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নেতারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে এসব কথা বলেন।
গত মঙ্গলবার সকাল থেকে সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন শিক্ষকরা। বিভিন্ন স্থান থেকে আসা শিক্ষকের কর্মসূচিতে অংশ নিচ্ছেন। রাতেও তারা প্রেস ক্লাবে অবস্থান করছেন বলে জানিয়েছেন। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন বুধবার রাত পর্যন্ত শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অবস্থানরত শিক্ষকদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি বলেও জানা গেছে।
এ পরিস্থিতিতে অবস্থান কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন বুধবার রাতে বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে সংগঠনের কার্যালয়ে সভায় বসেন বিটিএর কেন্দ্রীয় নেতারা। সভা শেষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আসেন তারা।
এসময় বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির পর আরো কঠোর আন্দোলনে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। এরকমই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত ঘোষণা দেয়া হবে।
তিনি আরো বলেন, লাগাতার অবস্থান থেকেও কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা আসছে। ৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারী, প্রয়োজনে তাদের পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাজপথে নামবো। মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের ঘোষণা নিয়ে তবেই শ্রেণিকক্ষে ফিরবো। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণ করতে সরকারের খুব বেশি অর্থ ব্যয় করতে হবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিটিএ নেতারা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই।