সরকারিকরণের দাবিতে দ্বিতীয় দিনের অবস্থানে শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

এমপিওভুক্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে রাজপথে অবস্থান নিয়েছেন সারাদেশ থেকে আসা শিক্ষকরা। মঙ্গলবার রাজধানীতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্বিতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।  এর আগে সোমবার সকাল থেকে ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট’ এর ব্যানারে ১৭টি সংগঠনের অনুসারী শিক্ষক কর্মচারীরা শুরু করেছেন।

সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষকরা লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করলেও গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে করোনা সংক্রমণ রোধে ১১ দফা বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি থেকে এসব বিধিনিষেধ কার্যকর হবে। এ পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের আন্দোলন চলবে না স্থগিত করা হবে তা নিয়ে চিন্তা করছেন নেতারা।

এদিকে অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষক নেতারা সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবিতে বক্তব্য দিচ্ছেন। শিক্ষক নেতারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের পুর্ণাঙ্গ সুযোগ সুবিধা না দেয়ায় আক্ষেপ জানান। তারা এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীদের বাড়িভাড়া চিকিৎসাভাতা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন ও শিক্ষকদের বদলি চালুর দাবি জানান। এছাড়া অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য এমপিও থেকে ১০ শতাংশ টাকা কেটে রাখার প্রতিবাদ জানান তারা। একই সঙ্গে ৫০০ টাকা চিকিৎসাভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া এবং ২৫ শতাংশ উৎসবভাতা দেয়াকে বৈষম্য বলে দাবি করেন। শিক্ষকরা বলেন, এসব বৈষম্য দূর করতে সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ জরুরি। 

সরকারিকরণের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে দ্বিতীয় দিনের মত অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা।

শিক্ষক নেতারা বলেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক আয় থেকে কোনো ভর্তুকি ছাড়াই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ সম্ভব। 

মহাজোট নেতাদের দাবি, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে নিলে প্রতিবছর সরকারের আয় হবে ২৬ হাজার কোটি টাকা। তাই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করা হলে শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন দিতে সরকারের বাড়তি কোনো টাকা খরচ হবে না।’ 

তারা  বলেন, সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করতে সরকারের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত প্রয়োজন। সরকার চাইলেই এমপিওভুক্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মুজিববর্ষেই সরকারিকরণ করতে পারে। 

শিক্ষক নেতাদের দাবি, এমপিওভুক্ত সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারি হলে সবচেয়ে লাভবান হবেন প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলের মানুষ। তাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী স্মরণীয় করে রাখতে মুজিববর্ষেই সব এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবি জানান তারা।

কয়েকজন শিক্ষক নেতা দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানান, সরকারিকরণের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছিল। কিন্তু করোনা সংক্রমণ রোধে ১৩ জানুয়ারি থেকে বিধিনিষেধ দেয়া হয়েছে। জাতিগড়ার কারিগর হিসেবে জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে সরকারের নেয়া সিদ্ধান্তে প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা রয়েছে। এ পরিস্থিতিতে মহাজোটের নীতিনির্ধারকরা ভাবছেন, আন্দোলন চলবে না স্থগিত হবে তা নিয়ে। 

অবস্থান কর্মসূচিতে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম, বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক অনলাইন পরিষদ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমাজ, বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী প্রধান শিক্ষক সমিতি, জাতীয়করণ মঞ্চ, বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ তৃতীয় শ্রেণি কর্মচারী পরিষদ, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষক পরিষদ, মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি, পদোন্নতিবঞ্চিত প্রভাষক সমাজ, বাংলাদেশ মাধ্যমিক সহকারী শিক্ষক সমিতি, বদলী প্রত্যাশী শিক্ষক, দি মাস্টারস্, বাংলাদেশ ভোকেশনাল শিক্ষক সমিতি, এনটিআরসিএ নিয়োগকৃত শিক্ষক পরিষদ এবং এনটিআরসিএ নিয়োগকৃত শিক্ষক বদলি ও জাতীয়করণ ঐক্য পরিষাদের অনুসারী শিক্ষকরা অংশ নিচ্ছেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ - dainik shiksha উপবৃত্তির জন্য সব অ্যাকাউন্ট নগদে রূপান্তরের নির্দেশ সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো - dainik shiksha ১৭তম ৩৫-প্লাস শিক্ষক নিবন্ধিতদের বিষয়ে চেম্বার আদালত যা করলো দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা - dainik shiksha তিন স্তরে সনদ বিক্রি করতেন শামসুজ্জামান, দুদকের দুই কর্মকর্তার সম্পৃক্ততা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0038299560546875