সরকারিকরণের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা শিগগিরই

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষকরা। বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির (বিটিএ) ব্যানারে সরকারিকরণের এক দফা দাবিতে এ কর্মসূচি চলছে। মঙ্গলবার দুপুর দেখা গেছে, কয়েক হাজার শিক্ষক জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সড়কে অবস্থান নিয়ে সরকারিকরণের দাবি জানাচ্ছেন। শিক্ষকরা বলছেন, তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝুলিয়ে সরকারিকরণের দাবি নিয়ে রাজপথে অবস্থান করছেন। সরকারিকরণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত তারা রাজপথেই থাকবেন। এদিকে দাবি নিয়ে কথা বলতে খুব শিগগিরই শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সঙ্গে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষক নেতারা। 

জানতে চাইলে বিটিএর সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ শেখ কাওছার আহমেদ দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে আজ মঙ্গলবার বা আগামীকাল বুধবার শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা হতে পারে। যদিও আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছ থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের এক দফা ঘোষণা আশা করছি। তিনি আরো বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সরকারিকরণের ঘোষণা দিলে আমরা রাজপথ ছেড়ে দেবো। আর দাবি আদায়ে যে কয়দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ থেকেছে সে কয়দিনের ছুটি গ্রীষ্মকালীন ছুটির সঙ্গে সমন্বয় করবো।

গত ১২ জুলাই থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন বিটিএ নেতারা। গত ১৬ জুলাই থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা ঝোলানোর কর্মসূচি পালন করছেন তারা। আজ মঙ্গলবার অবস্থান কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা কয়েক হাজার শিক্ষক অংশ নিচ্ছেন। জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কের দুই পাশে তারা অবস্থান নিয়েছেন। ফলে প্রেস ক্লাবের সামনে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারাগামী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্যরা শিক্ষকদের সড়কের একটি লেন ছেড়ে দিতে বলছেন। বিটিএ নেতারাও সাধারণ শিক্ষকদের সড়কের একটি লেন ছেড়ে দিয়ে অবস্থান নেয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার অবস্থানরত শিক্ষকরা সড়কের দুই লেনে অবস্থান করায় তাদের ওপর লাঠিচার্জ করেছিলো পুলিশ। 

এ ঘটনার পর শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানিয়েছেন, শিক্ষকদের দাবি দাওয়াগুলো নিয়ে তারা যেনো শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন সে ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

অবস্থানরত শিক্ষকরা বলছেন, এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, ১ হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান। একই কারিকুলামে একই সিলেবাসে পাঠদান করিয়েও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতনে রয়েছে বিস্তর পার্থক্য। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানদের থেকে এক ধাপ নিচে বেতন দেয়া হচ্ছে। বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরে যাওয়ার পর অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্টের টাকা পেতে বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হয়। তাছাড়া বিগত কয়েক বছর যাবত অবসর সুবিধা ও কল্যাণ ট্রাস্ট খাতে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন থেকে অতিরিক্ত ৪ শতাংশ কেটে নেয়া হচ্ছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করা হলেও প্রতিকার পাওয়া যায়নি। বর্তমান সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে হলে শিক্ষাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থা স্মার্ট করতে প্রয়োজন স্মার্ট শিক্ষক। তাই স্মার্ট শিক্ষক পেতে শিক্ষায় বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ মাধ্যমিক শিক্ষা সরকারিকরণের বিকল্প নেই। 

শিক্ষকরা বলছেন, একবারে না হলেও তারা ধাপে ধাপে জাতীয় শিক্ষানীতি অনুসারে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারিকরণ চাচ্ছেন। তারা সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ঘোষণা চান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর আয় সরকারি কোষাগারে নিয়ে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণে খুব বেশি অর্থ ব্যয় হবে না।

শিক্ষার সব খবর সবারআগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে সয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

দৈনিক শিক্ষা ডটকমের ইউটিউব চ্যানেল  SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা - dainik shiksha শনিবার থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা - dainik shiksha রোববার থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় খোলা ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু - dainik shiksha ট্রেনে কাটা পড়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল - dainik shiksha গুচ্ছের ‘বি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা কাল শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী - dainik shiksha শিক্ষকরাই স্মার্ট নাগরিক গড়ার কারিগর: শিল্পমন্ত্রী এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha এনটিআরসিএর সার্টিফিকেট সংশোধনের নতুন নির্দেশনা মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা - dainik shiksha মর্নিং স্কুলের ছয় সুবিধা উল্লেখ করলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা - dainik shiksha দেড় মাস পর ক্লাসে ফিরছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা, স্থগিত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার - dainik shiksha অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত স্কুলের সংখ্যা বাড়াতে চায় সরকার দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0025720596313477