বিশিষ্ট দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও সাহিত্যিক সরদার ফজলুল করিমের জন্মদিন আজ। তিনি ১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে বরিশালের আটিপাড়া গ্রামের এক কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিজেকে তিনি অতিসাধারণ ‘কৃষকের পোলা’ আখ্যা দিতেন সব সময়। আমৃত্যু জ্ঞানসাধক, জাতীয় অধ্যাপক, বিশিষ্ট অনুবাদক, প্রাবন্ধিক, রাজনীতিক সরদার ফজলুল করিম এক অসাধারণ সংগ্রামী জীবনের নাম।
বাবা খবিরউদ্দিন সরদার কৃষিকাজ করতেন। মা সফুরা বেগম ছিলেন গৃহিণী। তারা দুই ভাই তিন বোন। সরদার ফজলুল করিমের শৈশবকাল কেটেছে গ্রামে। ম্যাট্রিকুলেশন শেষে তিনি প্রথম ঢাকা আসেন ১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আইএ পাঠ সমাপ্ত করে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৪৫ খ্রিষ্টাব্দে দর্শনশাস্ত্রে অনার্স ও ১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শনশাস্ত্রে শিক্ষক হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন। পরবর্তীতে তার সাম্যবাদী বামপন্থী সামাজিক-রাজনৈতিক আন্দোলনে যুক্ত থাকার পর্যায়ে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক নিগৃহীত হন। রাজবন্দি হিসেবে দীর্ঘ ১১ বৎসর বিভিন্ন পর্যায়ে কারাজীবন যাপন করেন। জেলে থাকা অবস্থাতেই ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দ তিনি পাকিস্তান সংবিধান সভার সদস্য হিসেবে কাজ করেন। পরে ১৯৬৩ থেকে ’৭১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত বাংলা একাডেমির সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যক্ষ হিসেবে কাজ করেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি পাকিস্তান হানাদারবাহিনী কর্তৃক গ্রেফতার হন। পরবর্তিতে তিনি আবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭২ থেকে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত শিক্ষক হিসেবে শিক্ষাদান শুরু করেন।
তিনি ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ জুন ঢাকার শমরিতা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।