সর্বজনীন পেনশনের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাতিলের দাবিতে সোমবার অষ্টম দিনের মতো কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো ক্যাম্পাস। সর্বজনীন পেনশনের প্রত্যয় স্কিমে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে শুধু শিক্ষকদের সুবিধা দিলে মানবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবনের ফটকে শিক্ষক সমিতির কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের মহাসচিব অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা এ ব্যাপারে অনেক আগেই বলেছিলাম, এই স্কিম বাতিল করুন, না হলে আমরা কর্মবিরতি শুরু করব; কিন্তু তারা দাবি মানেননি। ফলে আমরা অর্ধদিবস কর্মবিরতির পর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করেছি। এখন আমরা সর্বাত্মক কর্মবিরতি শুরু করেছি। দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। যখন এই আন্দোলন শুরু করেছি, সফলতা আসার আগে আমরা ক্লাসে ফিরব না।’
সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. জিনাত হুদা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা তিন দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ও কর্মবিরতি করে যাচ্ছি। কিন্তু আমাদের দাবি মানার কোনো অবস্থা দেখছি না। এতদিন ধরে ৩৫টি বিশ্ববিদ্যালয় একসঙ্গে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিল, এখন আরও ৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সুতরাং আমাদের আন্দোলন যে যৌক্তিক, সেটি আরও স্পষ্ট হচ্ছে। আমাদের দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত পিছু হটব না। বিজয় নিয়েই আমরা ক্লাসরুমে ফেরত যাব।’
এদিকে একই দাবিতে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি, অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাবি কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। কর্মসূচির কারণে বন্ধ রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের দাপ্তরিক কাজ। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত তাদের দাবি মানা হচ্ছে, অনির্দিষ্টকালের জন্য সর্বাত্মক এই কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
প্রশাসনিক ভবনের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশ ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইতোমধ্যে আরও ৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যুক্ত হয়ে মোট ৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় একাত্মতা ঘোষণা করেছে চলমান এই আন্দোলনের সঙ্গে। যদি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাদ দিয়ে শুধু শিক্ষকদের কোনো সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হয়, তাহলে আমরা মাঠ ছাড়ব না। যদি কোনো সুযোগ-সুবিধা দিতেই হয়, তাহলে দেশের সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দিতে হবে।’
উল্লেখ্য, গত ১৩ মার্চ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের জারীকৃত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, যেসব শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী ১ জুলাই তারিখের পর যোগদান করবেন তাদের জন্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমের ‘প্রত্যয় স্কিম’ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। তাদের ক্ষেত্রে সেই সব প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার জন্য বিদ্যমান অবসর সুবিধাসংক্রান্ত বিধিবিধান প্রযোজ্য হবে না।