ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদের চলতি দায়িত্ব দেয়া প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। উপজেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য তথ্য সংবলিত ডাটাবেজ তৈরি ও সংরক্ষণ করে উপজেলা রির্সোর্স সেন্টারগুলো। সহকারী ইন্সট্রাক্টররা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ সরাসরি তদারকি করেন। ১৬তম গ্রেডে বেতনের ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদের চলতি দায়িত্ব পেলে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ তাদরকির দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু ১১তম গ্রেডে কর্মরত প্রধান শিক্ষক ও ১৩তম গ্রেডে কর্মরত সহকারী শিক্ষকরা তা মেনে নিতে পারছেন না। তারা বলছেন, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই তারা ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদের চলতি দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব বাতিল করে শিক্ষকদের মধ্য থেকে সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদের চলতি দায়িত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এ দাবি জানিয়ে সোমবার প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহপরিচালককে আবেদন দিয়েছেন তারা। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের ২৭ জন নেতার পক্ষ থেকে এ আবেদনটি দেয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরাধীন বিভিন্ন থানা বা উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের আবেদনের গত ২০ ফেব্রুয়ারি তাদের দেশের বিভিন্ন রিসোর্স সেন্টারে সহকারী ইন্সট্রাক্টরের বিদ্যমান শূন্য পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার এক প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি (প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের গেজেটেড ও ননগেজেটেড নিয়োগবিধিমালা-২০২১) অনুযায়ী সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদটি ১০ম গ্রেডের দ্বিতীয় শ্রেণির মর্যাদার পদ। এ পদের ২০ শতাংশ সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে এবং ৮০ শতাংশ পদ ফিডার পদ হিসেবে শিক্ষকদের (বিভাগীয় প্রার্থী) জন্য সংরক্ষিত। থানা বা উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদ ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে আইডিয়াল ও নোয়াড় প্রকল্পে সৃষ্ট জাতীয় বেতন স্কেলের ১৬তম গ্রেডের একটি পদ। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশে বলা আছে, ‘অব্যবহিত নিম্ন পদধারীদের থেকে পদোন্নতির যোগ্যতা বিচার করে চলতি দায়িত্ব দেয়া যাবে, অব্যবহিত নিম্ন পদধারীদের থেকে চলতি দায়িত্ব প্রদান করা না গেলে এক ধাপ নিম্ন পদধারী থেকে চলতি দায়িত্ব দেয়া যাবে। উপরের পদধারী কাউকে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকতার অধীন করা যাবে না।
শিক্ষক নেতারা আবেদনে আরো বলেছেন, সহকারী ইন্সট্রাক্টরের পদটি প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের ঊর্ধ্বতন পদ। পক্ষান্তরে ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের পদটি কোনোভাবেই অব্যবহিত নিম্ন পদ বা এক ধাপ নিম্ন পদ নয়। তাই, ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদেরকে সহকারী ইন্সট্রাক্টর পদে চলতি দায়িত্ব দেয়া জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের আদেশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। সহকারী ইন্সট্রাক্টরের কাজ আর ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের কাজ সম্পূর্ণ ভিন্ন। ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেবেন, এটা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। তাই ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের সহকারী ইন্সট্রাক্টরদের শূন্যপদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাবনা বাতিল করে প্রস্তাবিত নিয়োগবিধি অনুসারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্য থেকে এ পদে চলতি দায়িত্ব দিতে মহাপরিচালকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন।
আবেদনে স্বাক্ষর করেছেন, প্রাথমিক শিক্ষক নেতা মো. আনোয়ারুল হক তোতা, অজিত পাল, মো. আবুল কাশেম, মো. নুরুজ্জামান আনসারী, শাহিনুর আল আমিন, নূরে আল সিদ্দিকি, শাহিনূর আক্তার, তপন কুমার মন্ডল, আব্দুল হক, টি এম জাকির হোসেনসহ ২৭ জন নেতা। এর আগে গত শনিবার এক সভায় শিক্ষক নেতারা ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।