ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে বিভিন্ন মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েও সুপারিশবঞ্চিত ছয় শতাধিক প্রার্থী নিয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। তাদের চূড়ান্ত নিয়োগ সুপারিশ করা হবে। এ পদে নিয়োগ যোগ্যতায় পরিবর্তন এনেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আগে সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ থাকলে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগ সুপারিশ পেতেন না প্রাথীরা। তবে নীতিমালার সংশোধনীতে বলা হয়েছে, এ পদে নিয়োগ সুপারিশ পেতে যেকোনো একটি তৃতীয় বিভাগ গ্রহণ যোগ্য হবে। ফলে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ থাকলেও অন্যান্য কোনো ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি না থাকলে প্রার্থীরা নিয়োগ পেতে পারবেন। তবে সংশোধনীতে শিক্ষাগত যোগ্যতা আগের মতোই আছে। এ পরিস্থিতিতে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে বিভিন্ন মাদরাসায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েও সুপারিশ না পাওয়া ছয়শ’ পনেরো প্রার্থীকে নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে বলে জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) কর্মকর্তারা। বুধবার দুপুরে এনটিআরসিএর শিক্ষাতত্ত্ব ও শিক্ষামান শাখার কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, নিয়োগের যোগ্যতায় অসামঞ্জস্যতায় ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া ৬১৫ জন প্রার্থীকে সহকারী মৌলভী পদে চূড়ান্ত সুপারিশ করা হয়নি। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে নীতিমালা সংশোধনী জারি করা হয়েছে। সংশোধনীতে যেকোনো একটি ডিগ্রিতে তৃতীয় বিভাগ গ্রহণযোগ্য হওয়ায় ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ পাওয়া প্রার্থীদের চূড়ান্ত সুপারিশে আর কোনো জটিলতা নেই। তাই তাদের মধ্যে যারা ভি-রোল ফরম পূরণ করে পাঠিয়েছেন তাদের চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে।
তিনি আরো জানান, নীতিমালার সংশোধনটি নিয়ে শীর্ষ কর্তারা আলোচনা করে চূড়ান্ত সুপারিশের দিনক্ষণ ঠিক করবেন। তবে শিগগিরিই ওই প্রার্থীরা চূড়ান্ত সুপারিশ করা হবে বলে জানান তিনি।
জানা গেছে, আর সহকারী মৌলভী পদটি মূলত মাদরাসার ধর্ম বিষয়ের শিক্ষক পদ। স্কুল ও মাদরাসায় ধর্ম শিক্ষক পদে নিয়োগ যোগ্যতায় অসামঞ্জস্যতা ছিলো। সংশোধনী জারির আগে মাদরাসার এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী, সহকারী মৌলভী পদের জন্য সর্বশেষ ডিগ্রি বা ফাজিলে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য নয়। তবে সর্বশেষ স্তর ছাড়া অন্যান্য স্তরের যেকোনো একটিতে তৃতীয় শ্রেণি গ্রহণযোগ্য। কিন্তু স্কুলের এমপিও নীতিমালা অনুযায়ী একই শিক্ষাগত ডিগ্রি নিয়ে ধর্ম শিক্ষক হতে সমগ্র শিক্ষা জীবনে যেকোনো একটি তৃতীয় শ্রেণি বা বিভাগ গ্রহণযোগ্য। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বহু প্রার্থী ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। তবে সনদ যাচাই করে ফাজিলে তৃতীয় বিভাগ নিয়ে নির্বাচিত ছয় শতাধিক প্রাথীকে বাদ দিয়ে বাকিদের নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করেছিলো এনটিআরসিএ। ওই প্রার্থীরা চূড়ান্ত সুপারিশ পাওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।
যোগ্যতায় সংশোধন হলো যেভাবে :
কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব হাছিনা আক্তার স্বাক্ষরিত নীতিমালার সংশোধনী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে শিক্ষাগত যোগ্যতা আগের নীতিমালা (২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ২৩ নভেম্বর পর্যন্ত সংশোধিত) অনুযায়ীই আছে। অর্থাৎ সংশোধনী অনুযায়ী শিক্ষাগত যোগত্যা, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ফাজিল ডিগ্রিসহ বিএড-বিএমএড সমমান অথবা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আল কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল হাদীস অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, দা’ওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, আল ফিকহ অ্যান্ড লিগ্যাল স্টাডিজ বিষয়ে চার বছরের অনার্স (সম্মান) ডিগ্রি অথবা স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগে চার বছরে অনার্স (সম্মান) ডিগ্রি। এ যোগ্যতা নিয়ে সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগের এমপিও মিলবে ১০ গ্রেডে। আর যোগ্যতার অপর অংশে বলা হয়েছে, মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে ফাজিল ডিগ্রি বা ইসলামি বিশ্ববিদ্যারয় বা ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত মাদরাসা থেকে ফাজিল ডিগ্রি। এ যোগ্যতায় সহকারী মৌলভী পদে নিয়োগে এমপিও মিলবে ১১ গ্রেডে। তবে, সংশোধনীর শেষ অংশে বলা হয়েছে, সমগ্র শিক্ষাজীবনে যেকোনো একটি তৃতীয় বিভাগ বা শ্রেণি গ্রহণযোগ্য হবে।
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে দৈনিক শিক্ষার ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
দৈনিক শিক্ষাডটকমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।