রাজশাহী কলেজ ছাত্রাবাসে টর্চার সেলে সাংবাদিকসহ শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনায় ক্ষমা প্রার্থনাসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসের ভিত্তিতে বিষয়টি রফা হয়েছে। এ ঘটনায় রাজশাহী কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি রাসিক দত্ত নিজেদের দোষ স্বীকার করে ক্ষমা চেয়েছেন এবং ভবিষ্যতে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে বলে না বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
এছাড়া নির্যাতনে জড়িতদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দল থেকে বহিষ্কারের আশ্বাস দেন কলেজ ছাত্রলীগের এই নেতা। তবে দাবি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রলীগ সভাপতি রাসিক দত্তের পদত্যাগের দাবিতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন স্থানীয় সাংবাদিক নেতারা।
বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে রাজশাহী কলেজের শিক্ষক মিলনায়তনে আলোচনায় বসেন কলেজ প্রশাসন, কলেজ ছাত্রলীগ ও রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন ও রাজশাহী টেলিভিশন জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা।
আলোচনায় সাংবাদিক নেতারা অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের কলেজ ও ছাত্র সংগঠন থেকে স্থায়ী বহিষ্কার, সাংবাদিকসহ সাধারণ শিক্ষার্থীদের কোনো রাজনৈতিক প্রোগ্রামে যেতে বাধ্য না করা, ক্যাম্পাস সাংবাদিকসহ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে দৃশ্যমান পদক্ষেপের দাবি জানান।
এ বিষয়ে রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. আব্দুল খালেক বলেন, বুধবারের (২২ ফেব্রুয়ারি) ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। রাজশাহী কলেজের দীর্ঘদিনের সুনামকে ভূলুণ্ঠিত করতে ছাত্রলীগ নামধারীরা ছাত্রাবাসে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছে তার সমাধানে কলেজ প্রশাসন আন্তরিক। উদ্ভূত ঘটনায় ছাত্রলীগ ক্ষমা চেয়েছে। আর হামলাকারীরা ছাত্রলীগের কর্মী, কিন্তু কলেজের ছাত্র না। তাদের বিরুদ্ধে দলীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন নেতারা।
এর আগে বুধবার রাজশাহী কলেজের ক্যাম্পাস সাংবাদিকসহ অন্তত ৩০ সাধারণ শিক্ষার্থীকে মারধর করে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। ওইদিন সন্ধ্যায় রাজশাহী কলেজ মুসলিম ছাত্রাবাসের ই-ব্লক ও বি-ব্লকে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এরপর কলেজ অধ্যক্ষসহ সাংবাদিকরা ছাত্রাবাসে গেলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা দুর্ব্যবহার করেন এবং দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এ ঘটনায় নিরাপত্তাহীনতা প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
নির্যাতনের শিকার শিক্ষাণবীশ গণমাধ্যমকর্মীরা হলেন- কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব ও ইতিহাস বিভাগের ছাত্র শরীফুল ইসলাম। তারা ক্যাম্পাস সাংবাদিক সংগঠন রাজশাহী কলেজ রিপোর্টার্স ইউনিটির (আরসিআরইউ) সদস্য।
অভিযোগ উঠেছে কলেজ ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের জোরপূর্বক মিছিল-মিটিংসহ দলীয় কর্মসূচিতে নিয়ে যায় ছাত্রলীগ। তারা যেতে না চাইলে মারধরসহ নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয়। নির্যাতন করা হয় টর্চার সেলে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজ বা অসুস্থ থাকলেও ছাড় পান না শিক্ষার্থীরা। এছাড়াও সিট বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে। ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।