বাগেরহাটের ফকিরহাটে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে এমপিওভুক্ত এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। তিনি শিক্ষাবার্তা নামের একটি কথিত প্রচার মাধ্যমের কর্মী পরিচয়ে উপজেলার জাড়িয়া ভট্টখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় ওই শিক্ষকসহ মোট তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মোজাহিদুর রহমান। তিনি বাগেরহাট সদর উপজেলার রণভূমি মিরেরডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার আইসিটি বিষয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনিসহ মোট তিনজন ওই প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন। এ ঘটনায় গতকাল রোববার থানায় মামলা করেছেন ফকিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন দাশ। এ ঘটনায় একজন গ্রেফতার হলেও অভিযুক্ত শিক্ষক পলাতক আছেন। তাকে খুঁজছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) স্বপন কুমার রায় মামলার বরাত দিয়ে দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, গত ২০ জানুয়ারি জাড়িয়া ভট্টখামার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অফিস সহায়ক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং আয়া পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। নিয়োগ পরীক্ষায় ২৩ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করেন। পরীক্ষা চলাকালে সেখানে উপস্থিত হয়ে তিনজন নিজেদের সাংবাদিক পরিচয় দেন। এসময় তারা নিয়োগ পরীক্ষাকে প্রশ্নবিদ্ধ দাবি করে প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ শিকদারের কাছে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। তা না হলে সংবাদ প্রকাশের হুমকি দেন। একপর্যায়ে প্রধান শিক্ষক ভয় পেয়ে তাদেরকে ২৫ হাজার টাকা দেন। বাকি ২৫হাজার টাকা তিন দিনের মধ্যে দেয়ার জন্য তারা চাপ সৃষ্টি করেন। পরে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি স্বপন দাশকে বিষয়টি জানান। এরপর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান নিজ বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
তিনি আরও বলেন, মামলার বাকি দুই আসামি হলেন দৈনিক প্রবাহের সাংবাদিক পরিচয় দেয়া শেখ ফারুক হোসেন ও এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি পরিচয় দেয়া এইচ এম নাসির উদ্দিন। প্রধান আসামী শেখ ফারুক হোসেনকে (৪৫) পুলিশ গ্রেফতার করেছে।
ফকিরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মু. আলীমুজ্জামান সোমবার সন্ধ্যায় দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, তিন জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। একজনকে গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুইজন পলাতক আছেন। তাদের আমরা খুঁজছি। তাদের বিরুদ্ধে পুলিশি অভিযান চলছে।
এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সাংবাদিক পরিচয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ দীর্ঘ দিনের। এমন পরিস্থিতিতে ডিসি সম্মেলন উপলক্ষে এমপিও শিক্ষকদের সাংবাদিকতার সুযোগ বন্ধের প্রস্তাব করেছেন ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম।
এমপিও নীতিমালা অনুসারে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা সাংবাদিকতা বা অন্য কোনো লাভজনক কাজে নিয়োজিত থাকতে পারেন না। স্কুল-কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও নীতিমালায় উল্লেখ আছে, এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচারীরা একইসাথে একাধিক কোনো পদে বা চাকরিতে বা আর্থিক লাভজনক কোনো পদে নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। কিন্তু তারা বিধি ভঙ্গ করে সাংবাদিকতায় নিয়োজিত আছেন।