দৈনিক শিক্ষাডটকম, কোম্পানিগঞ্জ (সিলেট) : সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার এম সাইফুর রহমান ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষককে মারধর, কলেজের নানা বিষয়ে স্বেচ্ছাচারিতাসহ তার বিরুদ্ধে ডজনেরও বেশি অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি এসব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন অনিয়মের জন্য সিলেট শিক্ষা বোর্ডে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার দায়িত্ব থেকে তাকে অব্যাহতি দেয়। কলেজ অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের দুনীর্তির প্রতিবাদ করায় ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ আগস্ট সিনিয়র প্রভাষক ইকবাল হোসেনকে মারধর করেন তিনি। তাছাড়া কলেজের সহকারী অধ্যাপক মুর্শেদ আলমের বেতন-ভাতা দীর্ঘদিন আটকে রেখে হয়রানি করার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। আর কলেজের অধ্যক্ষ এবং সভাপতির নামে যৌথ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থাকলেও সেখানে টাকা জমা না দিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায় করা বিভিন্ন খাতের টাকা নিজের অ্যাকাউন্টে জমা দেন। সেখান থেকে বিনা ভাউচারে লাখ টাকা উঠিয়ে আত্মসাৎ করেন। তাছাড়া কলেজের টিনশেড ভবনেও গাদাগাদি করে ক্লাস করানো হয়। পাশাপাশি কলেজের আসবাবপত্র পুরনো ও অবকাঠামো নেই, শিক্ষকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড এবং বাড়িভাড়াও দীর্ঘদিন বকেয়া। আর তিনি কলেজের আবাসিক ভবনে থেকেও বাড়ি ভাড়া বাবদ অতিরিক্ত ৫ হাজার টাকা করে নেন। তিনি ২০০৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে কলেজের বিদ্যুৎ লাইন থেকে নিজের বাসভবনে ব্যবহার করে আসছেন। এ ব্যাপারে বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তাকে সর্তক করে নোটিসও দিলেছিলো। এছাড়াও ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির প্রায় ৩‘শ শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ইউনিক আইডি খোলার জন্য বিনা রশিদে ১‘শ টাকা করে এবং উপবৃত্তির জন্য ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের একাদশ শ্রেণির ১০৪ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ১শ’ টাকা করে আদায় করে কলেজের ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে নিজেই আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে ২০১৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষায় ফেল না করা শিক্ষার্থীদের পরীক্ষায় অংশ্রহণের সুযোগ না দিয়ে যারা দুই বা এক বিষয়ে ফেল করেছেন তাদেরকে পরীক্ষায় অংগ্রহণের সুযোগ দেন তিনি। আর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দে কলেজের এইচএসসির অটোপাস করা পরীক্ষার্থীদের ফরম ফিলাপ ও কেন্দ্র ফি‘র ৭৮০২০ টাকা শিক্ষা বোর্ড ফেরত দিলেও তা তিনি ওই শিক্ষার্থীদেরকে দেননি। এ বিষয়টি নিয়ে সিলেট মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
এদিকে এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামকে ফোন করলে তিনি অভিযোগের বিষয়গুলো অস্বীকার করে বলেন, এসব মিথ্যা, বানোয়াট কথা।
এ ব্যাপারে উপজেলা নিবার্হী অফিসার ও কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সুনজিত কুমার চন্দ জানান, আমি এখানে নতুন এসেছি, তাই এ ব্যাপারে আমি অবগত নই। তবে যদি কেউ অভিযোগ করলে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করবো।