বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী পৌষ মাসের শেষ দিনে রাজধানীর পুরান ঢাকায় উদযাপন করা হয় ‘সাকরাইন উৎসব’ যা স্থানীয়দের কাছে ‘ঘুড়ি উৎসব’ নামেও পরিচিত। আগামীকাল রোববার পৌষের শেষ দিনে পুরান ঢাকার বাসিন্দারা উৎসবটি উদযাপন করবেন। এ উপলক্ষে আয়োজনের কোনো কমতি রাখছেন না স্থানীয়রা।
এ উৎসবের প্রধান আকর্ষণ ঘুড়ি। তাই এ উৎসবকে সামনে রেখে রাজধানীর পুরান ঢাকার ঘুড়ি বিক্রির দোকানগুলোতে বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়। দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে রঙিন কাগজের বিভিন্ন আকৃতির ঘুড়ি। ঘুড়ির সাথে বিক্রি হয় নাটাই আর মাঞ্জা দেয়া সুতা। ঘুড়ি বিক্রির দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায় এসব দোকানে পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে একশ বা তারও বেশি দামের ঘুড়িও রয়েছে। অন্যান্য পণ্যের ব্যাবসায়ীরাও এ মৌসুমে দোকানে ঘুড়ি উঠিয়েছেন বিক্রির জন্য।
শাখারীবাজারে ঘুড়ি বিক্রেতা বুদ্ধ এন্ড কোং-এর স্বত্ত্বাধিকারী সত্যনারায়ণ সুর বলেন, সারা বছরই কম বেশি ঘুড়ি বিক্রি হয়। অনুষ্ঠানে সাজাতে কিনে নেন কেউ কেউ। তবে আমাদের ঘুড়ি বিক্রির মূল সময় হলো এই সাকরাইন উৎসব। সারাবছরের বেচাকেনা ছাড়িয়ে যায় এই সময়টাতে। আমার দোকানে প্রায় পনেরো রকমের ঘুড়ি রয়েছে যেগুলোর দাম পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে পঞ্চাশ টাকা পর্যন্ত। বেশি বড় বা দামি ঘুড়ি নিতে হলে আগে অর্ডার দিয়ে রাখতে হয়।
সাকরাইন উপলক্ষে ঘুড়ি বিক্রির ভ্রাম্যমাণ দোকান দিয়ে ঘুড়ি বিক্রি করছেন করুনা রাণি সাহা। তিনি বলেন, পাইকারি দোকান থেকে ঘুড়ি কিনে আনি। এই সময়ে প্রচুর ঘুড়ি বিক্রি হয়। বাচ্চারা আনন্দ করে ঘুড়ি কেনে। বিক্রি বেশি হওয়ায় লাভও ভালোই হয়।
পাঁচ বছরের শিশু বুশরাকে সঙ্গে নিয়ে তার জন্য ঘুড়ি কিনতে এসেছেন মো. নীরব ও সাফায়াত। মো. নীরব বলেন, আমরা নিজেদের জন্য গতকালই ঘুড়ি কিনেছি। বুশরা আজ ঘুড়ি কিনতে বায়না ধরায় ওকে সাথে নিয়ে এসেছি। ওর পছন্দের ঘুড়ি কিনবো।
মালিটোলা থেকে ঘুড়ি কিনতে এসেছেন চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আজহার উদ্দীন রাইয়ান। রাইয়ান বলেন, সাকরাইন আমাদের পুরান ঢাকার ঐতিহ্য। আমি আগেও ঘুড়ি কিনে নিয়েছি। আজ আবার এসেছি। আজ নতুন তিনটি ঘুড়ি কিনলাম। সাকরাইনের দিন বিকেল বেলা ঘুড়ি উড়ানো ও সুতো কাটাকাটি খেলা হয়। সেজন্য সাথে নাটাই ও মাঞ্জা দেয়া সুতো কিনেছি।