সাক্ষাৎকার বন্ধে যুক্তরাষ্ট্র গমনেচ্ছু শিক্ষার্থীরা বিপাকে

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কমপ্লিট শাটডাউনের সহিংসতা শুরুর পর থেকে শিক্ষার্থীদের  সাক্ষাৎকার নিচ্ছে না ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। এর ফলে স্কলারশীপ পাওয়া কয়েজ হাজার শিক্ষার্থী পড়েছেন অনিশ্চয়তায়। ফুল ফান্ড স্কলারশিপ পাওয়া অনেক শিক্ষার্থীও যথাসময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হনে না পারার শঙ্কায় পড়েছেন।   

দূতাবাস থেকে বারবার সাক্ষাৎকারের তারিখ পিছিয়ে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র গমনেচ্ছুদের মধ্যে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হলেও মার্কিন দূতাবাস এ বিষয়ে কিছু বলছে না।

ভিসাপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারের নির্দিষ্ট তারিখ দেয়া হলেও তা বাতিল করে পরবর্তী তারিখ জানিয়ে মেইল করা হচ্ছে। এমনকি নতুন করে ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের সময় নেয়ার জন্য দূতাবাসের ওয়েবসাইটে চেষ্টা করেও সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।  যাদের ভিসার জন্য সাক্ষাৎকারের তারিখ ১৭ জুলাই নির্ধারিত ছিল, তাদের তারিখ পিছিয়ে দেয়া হয়েছে। যাদের সাক্ষাৎকারের তারিখ ২০ জুলাই ছিলো, তাদের অনেকেই এখনো নতুন করে কোনো তারিখ পাননি।  

জানা গেছে, স্কলারশিপ পাওয়ার পর নির্ধারিত দিনে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে উপস্থিত হতে না পারলে স্কলারশিপ বাতিলের ঝুঁকি থাকে। এমনকি স্কলারশিপ বিদ্যমান থাকলেও ফান্ডের বিষয়টি নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। 

এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির অ্যাডওয়ার্ড মুরো কলেজ অব কমিউনিকেশনের ডিন প্রফেসর ড. ব্রুস পিংকলেশন বলেন, ‘স্কলারশিপের আওতায় উচ্চতর ডিগ্রির জন্য শিক্ষার্থীদের ক্লাসের শুরুর দিনগুলোয় উপস্থিতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সময় স্কলারশিপ পাওয়া শিক্ষার্থী ক্লাসে উপস্থিত না থাকলে তার ফান্ড এমনকি স্কলারশিপ নিয়েও জটিলতা তৈরি হতে পারে। এক্ষেত্রে অবশ্য ফ্যাকাল্টি ও স্কলারশিপভেদে নিয়মটা ভিন্নতর।

জানা গেছে, মুক্তিযোদ্ধা কোটাবিরোধী আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠলে দেশে কারফিউর হওয়ার পর  ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের কিছু কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার অনুমোদন দেয়া হয়। এর পরপরই দূতাবাসের বেশ কয়েকজন কর্মী যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যান। গত ২৪ জুলাই এক নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথু মিলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, ঢাকায় মার্কিন দূতাবাসের ‘জরুরি নন’, এমন কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের স্বেচ্ছায় বাংলাদেশ ছেড়ে যাওয়ার বিষয়টিতে যুক্তরাষ্ট্র অনুমোদন দিয়েছে। এসব কর্মী পুনরায় ঢাকায় ফিরে কাজে যোগদানের আগ অবধি শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার শুরু করা মার্কিন দূতাবাসের জন্য কঠিন হবে।

প্রসঙ্গত, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রতি বছর বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান। গত বছরও দেশটিতে ১৩ হাজার ৫৬৩ শিক্ষার্থী পড়াশোনার জন্য গেছেন। বাংলাদেশ থেকে উচ্চ শিক্ষা নিতে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া শিক্ষার্থীদের নিয়ে গত ১০ জুলাই ‘মিডিয়া নোটে’ মার্কিন দূতাবাস জানায়, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দের তুলনায় ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দে দেশটিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী পড়তে যাওয়ার হার বেড়েছে ২৮ শতাংশ। এর আগে কোনো একক শিক্ষাবর্ষে এতো শিক্ষার্থী বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পড়তে যাননি। মার্কিন মুলুকে বিদেশী শিক্ষার্থী যাওয়ার তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩তম। 

ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস সূত্রে জানা গেছে, গত এক দশকে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। ২০১১-১২ অর্থবছরে দেশটিতে বাংলাদেশী শিক্ষার্থী গিয়েছিলেন ৩ হাজার ৩১৪ জন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩ হাজার ৫৬৩-এ। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! - dainik shiksha মিনিস্ট্রি অডিটরদের গরুর দড়িতে বাঁধবেন শিক্ষকরা! অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা - dainik shiksha অ্যাডহক কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনা কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ - dainik shiksha সোহরাওয়ার্দী কলেজ যেনো ধ্বং*সস্তূপ জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল - dainik shiksha জোরপূর্বক পদত্যাগে করানো সেই শিক্ষকের জানাজায় মানুষের ঢল শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় - dainik shiksha শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটি সারানোর এখনই সময় কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0040109157562256