সাক্ষ্যের জন্য ডাকা হয়েছে তনুর খালাতো বোনকে

কুমিল্লা প্রতিনিধি |

সাত বছর ৪ মাসেও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর মৃত্যু রহস্যের দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি নেই। তবে হত্যা মামলাটি ফের আলোচনায় এসেছে। সাক্ষ্যের জন্য তনুর খালাতো বোনকে ডাকা হয়েছে।

কয়েক দফা মামলার তদন্তকারী সংস্থার পরিবর্তনের পর মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই। এ মামলার সাক্ষ্য দিতে সোমবার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মজিবুর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশ তনুর খালাতো বোন লাইজু জাহানের কুমিল্লার মুরাদনগরের মির্জাপুর গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এতে আগামী ৩ আগস্ট সকাল ১০টায় কুমিল্লা নগরের হাউজিং এস্টেট পিবিআই কুমিল্লা দপ্তরে লাইজুকে হাজির হতে বলা হয়েছে।
তবে বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তনুর পরিবার। তারা বলছেন, ঘটনার পর থেকে দীর্ঘ বছরে বেশ কয়েকবার লাইজুসহ তাদের পরিবারের সদস্যরা তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাছে সাক্ষ্য দিয়েছেন। এখন আবারও নতুন করে সাক্ষ্যের জন্য টানাহেঁচড়া করা হচ্ছে।

জানা যায়, ২০১৬খ্রিষ্টাব্দের ২০ মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর আজও এ হত্যারহস্যের জট খোলেনি। হত্যাকাণ্ডের পরদিন তনুর বাবা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন কোতোয়ালি মডেল থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ মার্চ তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্ত করা হয়। ওই ময়নাতদন্তেও মৃত্যুর কারণ নির্ণয় করা যায়নি। এ নিয়ে দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে। মামলাটি প্রথমে থানা পুলিশ, জেলা গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) পর ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের  ১ এপ্রিল থেকে তদন্তের দায়িত্ব পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি। সর্বশেষ ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের  নভেম্বর মাসে কুমিল্লা সিআইডি থেকে মামলার ডকেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঢাকায় হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত সংস্থাগুলোর সূত্রে জানা যায়, এরই মধ্যে বেশ কয়েকজনের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। সিআইডির ফরেনসিক ল্যাবে ওই নমুনার প্রোফাইলিংয়ের কাজ হয়।

মামলার বাদী তনুর বাবা ইয়ার হোসেন জানান, হত্যাকাণ্ডের পর দফায় দফায় পুলিশ, ডিবি, সিআইডি ও পিবিআইয়ের কাছে ক্যান্টনমেন্ট, কুমিল্লা ও ঢাকায় গিয়ে লাইজু ও স্কুলের শিক্ষকসহ পরিবারের সদস্যরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। এ পর্যন্ত মামলার কোনো অগ্রগতি তারা জানতে পারেননি। তাদের সঙ্গে পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তার কোনো যোগাযোগ নেই। সোমবার হঠাৎ করে মুরাদনগরের বাঙ্গরা বাজার থানা পুলিশ নোটিশ নিয়ে লাইজুদের বাড়িতে যায়। তিনি এখন বিবাহিতা, স্বামীর সংসারে সিলেটে অবস্থান করছেন।

তনুর ছোট ভাই আনোয়ার হোসেন রুবেল বলেন, সাক্ষ্য আর তদন্তে কেটে গেছে ৭ বছর। দফায় দফায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তন হলেও মামলার অগ্রগতি নেই। সবাই ন্যায়বিচারের আশ্বাস দেয়। তিনি বোনের হত্যাকাণ্ডের বিচার পাওয়া নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই পরিদর্শক মজিবুর রহমান সন্ধ্যায় বলেন, মামলাটি অধিক গুরুত্ব দিয়ে তারা আন্তরিকভাবে তদন্ত করছেন। ইতোপূর্বে সংগ্রহ করা ডিএনএ রিপোর্ট পর্যালোচনা করা হচ্ছে। মামলার তদন্তের স্বার্থে তনুর খালাতো বোন লাইজুর বক্তব্য নেওয়া হবে। এরই মধ্যে বেশ কিছু অগ্রগতি আছে, তবে এখনই তা গণমাধ্যমে বলা ঠিক হবে না। তিনি আরও বলেন, তদন্তভার পিবিআইতে আসার পরই সিনিয়র অফিসারদের পরামর্শক্রমে একাধিকার ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ তনুর পরিবার ও স্কুলের শিক্ষকসহ কয়েকজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তদন্তের স্বার্থে আরও কিছু বক্তব্য নেওয়া হতে পারে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি - dainik shiksha এখনো প্রস্তুত হয়নি একাদশের, পাঁচ বইয়ের পাণ্ডুলিপি সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব - dainik shiksha জাল সনদে চাকরি, লাইব্রেরিয়ানকে তলব শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ - dainik shiksha শিক্ষার মানোন্নয়নে সরকারের নতুন পদক্ষেপ প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ - dainik shiksha প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0051779747009277