সাজার পরিবর্তে অভিযুক্ত ৪৯ শিশুকে বই দিলেন আদালত

নিজস্ব প্রতিবেদক |

সুনামগঞ্জে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একসঙ্গে ৩৫টি মামলার রায় দিয়েছেন আদালত। এই রায়ে ৪৯ জন অভিযুক্ত শিশুকে সাজার পরিবর্তে সুন্দর জীবনে ফিরে আসার সুযোগ দিয়ে পরিবারের কাছে হস্তান্তরের আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন। 

বুধবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় আদালত অভিযুক্ত শিশু ও তাদের অভিভাবক এবং আইনজীবীদের উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন।

 

অভিযুক্ত শিশুরা জানান, তাদের ওপরে মামলা থাকার কারণে প্রতি মাসে আদালতে হাজির হতে হতো। লেখাপড়া বাদ দিয়ে আদালতে হাজির হতেন তারা। এ কারণে তাদের অনেক ক্ষতি হতো। আদালতের আদেশে তারা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবেন। আদালতের আদেশ তারা মেনে চলবেন। রায় ঘোষণার পর আদালতের পক্ষ থেকে প্রত্যেক শিশুর হাতে ১০০ মনীষীর জীবন নামে একটি করে বই উপহার দেওয়া হয়।

বিচারক জাকির হোসেন এই রায়ের পাশাপাশি পরিবারের সদস্যদের শিশুদের অপরাধপ্রবণতা থেকে দূরে রাখতে সুন্দর পরিবেশ তৈরি করে দেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি জানান, শিশুদের উদ্দেশে তিনি আগামীর বাংলাদেশের নেতৃত্ব দিতে প্রস্তুত হওয়ার উৎসাহ দেন, এই মামলাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই চলমান ছির, রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছে বাদী এবং বিবাদী পক্ষের সবাই।

অভিযুক্ত শিশুরা বলেন, আদালতের এই রায়ের ফলে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারবেন তারা। প্রবেশন কর্মকর্তা শাহ মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, শিশুদের শর্ত মেনে চলার বিষয়টি দেখভাল করবেন তিনি।

 

সুনামগঞ্জ সনাকের সভাপতি এড আইনুল ইসলাম বাবলু বলেন, সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা ও শিশুদের অধিকার রক্ষায় আদালতের এই রায় দেশের বিচারিক ইতিহাসে একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। সম্প্রতি লক্ষ করা যাচ্ছে প্রায় প্রতিটি মামলায় শিশুদের অভিযুক্ত করে মামলা দেওয়া হয়। দেশে বিভিন্ন স্থানে লেখাপড়া করা শিশুদের বাড়ির ঘটনার সঙ্গে জড়িয়ে মামলা দেওয়া হয়। তাদের আসামি করা হয়। এটি মূলত দুই কারণে করা হয় একটি হলো শিশুর জীবনকে নষ্ট করে দেওয়া ও পরিবারের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস করে দেওয়া। ভবিষতে শিশুদের মামলার আসামি করার আগে তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে শিশু আসামি করার প্রবণতা কমবে।

যে কোনো মামলায় শিশুদের জড়িয়ে অভিযোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ভালোভাবে খতিয়ে দেখা উচিত।

প্রবেশন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিউর রহমান বলেন, আদালতের আদেশ মেনে চলার বিষয়টি তারা কঠোরভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন। কেউ আদেশ লঙ্ঘন করলে আদালতে বিষয়টি তুলে ধরবেন। 

আদালত রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, শিশুরা হলো জাতির ভবিষ্যৎ। তারা বিভিন্ন অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে নানান মামলায় জড়িত ছিল। আদালত শিশু আইনের বাস্তবায়ন ও শিশু অধিকার রক্ষায় এ রায় দিয়েছেন। শিশুদের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখার জন্য অভিভাবকদের আদেশ দেন। যাতে শিশুরা আবারো অপরাধে জড়িয়ে না পড়ে।  


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ - dainik shiksha পরীক্ষার নাম এসএসসিই থাকবে, ওয়েটেজ ৫০ শতাংশ ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী - dainik shiksha ফরেনসিক অডিটে ফাঁসছেন দশ হাজার জাল সনদধারী কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ - dainik shiksha প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের পিএইচডি ফেলোশিপ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন - dainik shiksha জড়িত মনে হলে চেয়ারম্যানও গ্রেফতার: ডিবির হারুন কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি - dainik shiksha কলেজ পরিচালনা পর্ষদ থেকে ঘুষে অভিযুক্ত সাংবাদিককে বাদ দেওয়ার দাবি পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ - dainik shiksha পছন্দের স্কুলে বদলির জন্য ‘ভুয়া’ বিবাহবিচ্ছেদ জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন - dainik shiksha জাতীয়করণ আন্দোলনের শিক্ষক নেতা শেখ কাওছার আলীর বরখাস্ত অনুমোদন হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা - dainik shiksha হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে - dainik shiksha সনদ বাণিজ্য : কারিগরি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানের স্ত্রী কারাগারে সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা - dainik shiksha সপ্তম শ্রেণিতে শরীফার গল্প থাকছে, বিতর্কের কিছু পায়নি বিশেষজ্ঞরা please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026609897613525