সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ দুর্নীতি করে টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন প্রকল্পে কমিশন বাণিজ্য ও আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ও বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচার করেছেন তিনি । ভাই, স্ত্রী ও আত্মীয়স্বজনের মাধ্যমে নামে-বেনামে সম্পদ অর্জন করেছেন বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে উল্লেখ করা হয়েছে দুদকের প্রতিবেদনে।
সিলেটের সবচেয়ে গরিব ও সৎ রাজনৈতিক নেতা দাবিদার সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ও গোলাপগঞ্জ বিয়ানীবাজার আসনের (সিলেট-৬) সাবেক সংসদ সদস্য নূরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জন ও বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাচারের তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধানে লন্ডন ও আমেরিকায় আত্মীয়স্বজনদের কাছে টাকা পাচারের প্রাথমিক তথ্য-প্রমাণ পাওয়া গেছে।
গত মঙ্গলবার দুদকের মহাপরিচালক মো: আক্তার হোসেন গণমাধ্যমকে জানান, দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন, নিজ স্ত্রী ও যুক্তরাজ্য প্রবাসী ভাই ডাক্তার নজরুল ইসলাম এবং যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বন্ধু কামাল আহমদের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচারের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধান চালানো হয়। গোয়েন্দা তথ্যানুসন্ধানে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় এ বিষয়ে প্রকাশ্যে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার আগের দিন গত ৪ আগস্ট বেলা ৩টার দিকে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক আইডি ডিএক্টিভেট করে লাপাত্তা হয়ে যান এই সাবেক মন্ত্রী। বর্তমানে তিনি বিদেশে নাকি দেশে আত্মগোপনে তা জানা যায়নি। সাবেক এই মন্ত্রী থানা ও আদালত মিলে দায়েরকৃত ছয়টি মামলার আসামি বলে জানা গেছে।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের বিরুদ্ধে দুদকের অভিযোগে বলা হয়, সিলেট-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এবং সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে কমিশন গ্রহণ করে কোটি কোটি টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। নিজ নামে উত্তরা আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটসহ ৫ কাঠা জমি, নিকুঞ্জ আ/এ ৩ কাঠা জমির মালিকানা অর্জন করেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ কমিউনিস্ট পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে ১৯৯৬ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ২০০৮ খ্রিষ্টাব্দে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান। পরবর্তী সংসদেও তিনি বিজয়ী হয়ে আবার শিক্ষামন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এ সময় বাংলাদেশের পরিবর্তে ভারতে বই ছাপানো হয়। সে সময়ই অভিযোগ ওঠে, তিনি ভারতে বই ছাপিয়ে ঠিকাদারদের কাছ থেকে শতকোটি কমিশন বাণিজ্য করেছেন। এসব দুর্নীতি সম্পর্কে শিক্ষা বিভাগের সবাই অবগত ছিলেন। কিন্তু কেউ কথা বলেতে সাহস করতেন না। নাহিদের আমলেই শিক্ষা ব্যবস্থায় মারাত্মক সঙ্কট ঘনীভূত হয়। ফেলের হার কমিয়ে দিয়ে পাসের হার বাড়ানো হয়।