সাময়িক বহিষ্কারে দুর্দশায় শিক্ষকেরা

দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক |

প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে বিরোধের জেরে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার এএনএম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান ১৪ মাস যাবৎ সাময়িক বরখাস্ত। এই শিক্ষকের দাবি তার বিরুদ্ধে নানা মিথ্যা অভিযোগ এনে স্কুল পরিচালনা কমিটি তার অর্ধেক বেতন বন্ধ করে রেখেছে। আর চাকরিতে ফেরাতে প্রধান শিক্ষক চাইছেন ঘুষ। এমন দুদর্শা বেলাবের এই শিক্ষকের একার নয়। দেশের অসংখ্য এমপিও শিক্ষক এই ভোগান্তির শিকার।  

বিভাগীয় অভিযোগ বা সাময়িক বহিষ্কার আদেশ দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার কারণে বেতন-ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব শিক্ষক।

এদিকে, দেশের উচ্চ আদালতের দেয়া এক রায়ে শিক্ষকদের অভিযোগ ৬ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশনা দিয়েছিলো। এরই প্রেক্ষিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়ে যাচ্ছে। তবে এখনো এই কার্যক্রমের গতি ফেরেনি বলে দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানিয়েছে অগণিত এমপিও শিক্ষক। 

জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় সর্বশেষ ৮ আগস্ট এক পরিপত্রের মাধ্যমে ফের জানায় অভিযোগ দ্রুত নিষ্পত্তির সেই নির্দেশনার কথা। 

নির্দেশনায় বলা হয়, স্বীকৃত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় কার্যক্রম ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে হবে। অন্যথায় ১৮০ কার্যদিবস শেষে এই শিক্ষক-কর্মচারী স্বয়ংক্রিয়ভাবে নিজ পদে পুনর্বহাল হয়ে বিধি মোতাবেক পূর্ণ বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন।

এতে আরো বলা হয়, সাময়িক বরখাস্তের তারিখ বা বিভাগীয় কার্যক্রম শুরুর তারিখ থেকে এই সময় গণনা করতে হবে। 

এর আগে এ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষকের করা রিট নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট বেসরকারি স্কুল, কলেজ ও মাদরাসার কোনো শিক্ষককে ছয় মাসের বেশি সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা যাবে না বলে নির্দেশনা দিয়ে রায় দিয়েছিলো। কিন্তু এই রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি প্রকাশ পায় ২০২ রায়ে বলা হয়েছিলো, কোনো শিক্ষককে ছয় মাসের বেশি বরখাস্ত করে রাখলে ওই আদেশ বাতিল বলে গণ্য হবে। 

বেসরকারি শিক্ষকদের চাকরিবিধিতেও এ বিধান সংযোজন করতে বলেছিলো আদালত। একইসঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে চিঠি ইস্যু করে সব শিক্ষা বোর্ডকে এ বিষয়ে পরিপত্র জারি করতে বলা হয়। তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বারবার পরিপত্র জারি করে এ নির্দেশনার কথা জানালেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ড তা মানছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মাগুরা উপজেলা সদরের বাহারবাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. বাদশা মিয়াকে অতিরিক্ত বেতন নেয়ার অভিযোগে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক বরখাস্ত করা হয়। তবে বেসরকারি শিক্ষকদের সাময়িক বরখাস্ত রাখার কোনো নির্ধারিত মেয়াদ ছিলো না। ফলে দীর্ঘদিন ওই শিক্ষকের অভিযোগের নিষ্পত্তি না করায় তিনি হাইকোর্টে ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দে রিট দায়ের করেন। পরে হাইকোর্ট এ বিষয়ে রুল জারি করেন।

সেই রিট নিষ্পত্তি করে স্কুল, কলেজ বা মাদরাসার কোনো শিক্ষককে ছয় মাসের বেশি সাময়িক বরখাস্ত করে রাখা যাবে না উল্লেখ করে রায় দেন হাইকোর্ট। 

সাময়িক বরখাস্তের মেয়াদ ৬ মাসের বেশি সময় পার হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি পুনর্বহাল হবেন বলে জানিয়েছিলেন আইনজীবীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0041451454162598