মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করে আসছে একটি চক্র। প্রতিটি সার্টিফিকেটের বিনিময়ে ৫০ হাজার থেকে কয়েক লাখ টাকা নিয়েছে তারা।
সিটি ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেট বিক্রির দায়ে সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছে চক্রের এক সদস্য।
জানা গেছে, সিটি ইউনিভার্সিটির অভ্যন্তরীণ অডিটে সার্টিফিকেট জালিয়াতির বিষয়টি সামনে এসেছে। চক্রটি প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটের আদলে ইনফো শব্দ যুক্ত করে অনুরূপ একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে জাল সার্টিফিকেটের তথ্য নবায়ন করে রাখত। কোনো প্রতিষ্ঠান ওই ভুয়া ওয়েবসাইটে ঢুকলে সার্টিফিকেটগুলো আসল বলে মনে করত।
সিটি ইউনিভার্সিটির অডিটে সার্টিফিকেট জালিয়াতির বিষয়টি সামনে আসার পর বুধবার রাজধানীর তেজগাঁও থানায় মামলা করেন প্রতিষ্ঠানটির রেজিস্ট্রার প্রফেসর মীর আকতার হোসেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএমপির তেজগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন বলেন, মামলাটি ডিবির (গোয়েন্দা পুলিশ) সাইবার ইউনিট তদন্ত করছে। এ বিষয়ে তারাই বলতে পারবেন। তবে ডিবির সাইবার ইউনিটের কর্মকর্তারা এ নিয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
মামলার এজাহারে সিটি ইউনিভার্সিটির রেজিস্ট্রার আকতার হোসেন বলেন, ২৬ জুন অফিসের মেইল চেক করে দেখতে পাই ৩টি পৃথক ইমেইল থেকে সিটি ইউনিভার্সিটির মতো অবিকল ৩টি সার্টিফিকেট পাঠানো হয়েছে এবং সেগুলো যাচাই করে সত্য কিনা জানতে চাওয়া হয়েছে। উক্ত সার্টিফিকেট ইংল্যান্ডের সাউথওয়েলস ইউনিভার্সিটিসহ দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়েছে। পরে আরও কয়েকটি ইমেইল পেলে বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখা শুরু করি। পরে দেখতে পাই-অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি ২৫ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত ইস্যুকৃত সার্টিফিকেটের অনুরূপ দেখতে জাল সার্টিফিকেট তৈরি করে বিক্রি করেছে।’
রেজিস্ট্রার আকতার হোসেন আরও বলেন, আমরা তদন্ত করে দেখতে পেয়েছি কমপক্ষে ১৪টি জাল সার্টিফিকেট বিক্রি করা হয়েছে। এতে আমাদের প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। পুলিশ জানিয়েছে, শুধু এই দুই ইউনিভার্সিটিই নয়, বেশ কয়েক বছর ধরেই সক্রিয় রয়েছে সার্টিফিকেট বিক্রির চক্র। আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটির সার্টিফিকেটও জালিয়াতি করে আসছিল চক্রটি। সার্টিফিকেট জালিয়াতির পেছনে প্রতিষ্ঠানটির একজন সাবেক শিক্ষক জড়িত। তাকে গ্রেফতারে কাজ করছে একাধিক দল।