রাজধানীর গুলিস্তান সংলগ্ন সিদ্দিকবাজারে সাততলা ভবনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল ও শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তাদের মধ্যে বার্ন ইউনিটে ভর্তি আছেন ১০ জন। যাদের সবারই অবস্থা আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, ঢামেক হাসপাতালে এ পর্যন্ত শতাধিক আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিলেও এখন ভর্তি আছেন ২০ জন।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলের ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর তথ্য মিলেছে। এদের মধ্যে দুজন নারী এবং ১৬ জন পুরুষ। ভবনটি থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ জনকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিস। ভবন ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় রাতে উদ্ধারকাজ স্থগিত করা হয়। আজ বুধবার সকাল থেকে আবার তৎপরতা শুরু করেছে ফায়ার সার্ভিসসহ নিরাপত্তা বাহিনী।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক বলেন, ‘বর্তমানে হাসপাতালে ২০ জন ভর্তি আছেন। তাদের মধ্যে একজন আইসিইউতে। বাকি সবার অবস্থা উন্নতির দিকে। এখন পর্যন্ত এখানে শতাধিক চিকিৎসা নিয়েছেন। যার যে চিকিৎসা দরকার ছিল, তাকে সেটা দেওয়া হয়েছে।’
পরিচালক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যারা মারা গেছেন, তাদের মধ্যে ১৬ জনের মরদেহ জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, একজনকে স্বজনরা নিয়ে গেছেন।’
এদিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন আজ সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জানান, এই হাসপাতালে এখন ভর্তি আছেন ১০ জন। তাদের মধ্যে তিনজন আইসিইউতে। এই তিনজনের মধ্যে দুইজন লাইফ সাপোর্টে। তাদের কেউই শঙ্কামুক্ত নন। সবার শরীরের ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ দগ্ধ এবং তাদের সবারই শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বিস্ফোরণের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে গঠিত এই কমিটিকে পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সকালে ঘটনাস্থলে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের উপকমিশনার (ডিসি) জাফর হোসেন সাংবাদিকদের জানান, বিস্ফোরণের ঘটনায় উদ্ধারকাজের জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক), সেনাবাহিনী ও বিশেষায়িত সংস্থার সমন্বয়ে একটি জাতীয় কমিটি গঠন করা হয়েছে।