সিরাজগঞ্জ আদালতে কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

সিরাজগঞ্জ জেলা জজ ও চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দু’বছর আগে তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারকরা নিজেদের খাসকামরায় পছন্দের পরীক্ষার্থীদের বসিয়ে ‘গোপন পরীক্ষা’ নিয়েছিলেন। সেই ছবি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফাঁস হয়েছে। কারচুপির মাধ্যমে ৩৪ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সাত ভুক্তভোগী সিরাজগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে লিখিত অভিযোগ দেন। তারা হলেন– জাফর ইমাম, মঞ্জুর আলম, আকাশ সাহা, বিপুল রাহা, রিজন আহম্মেদ, শাহিন রেজা ও শিহাব উদ্দিন। তাদের লিখিত অভিযোগসহ দুর্নীতির কিছু নথিপত্র ও ভাইরাল হওয়া ছবি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। 

জানা গেছে, ওই দুই আদালতের সাঁটমুদ্রাক্ষরিক কাম কম্পিউটার অপারেটর, প্রসেস সার্ভার, অফিস সহায়ক, নাজির, হিসাবরক্ষক, বেঞ্চ সহকারী, ক্যাশিয়ার, লাইব্রেরি সহকারী, অফিস সহায়ক, নৈশপ্রহরীসহ ৩৪ পদে নিয়োগে  বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। নিয়োগ কমিটির প্রধান ছিলেন সাবেক সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা নাজির (বর্তমানে রংপুরে কর্মরত)। নিয়োগ, বাছাই ও পরীক্ষা গ্রহণ-সংক্রান্ত কমিটির সদস্য ছিলেন সদরের সিনিয়র সহকারী জজ মিনহাজ উদ্দিন ফরাজী এবং যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ তানবীর আহম্মেদ। কমিটির সভাপতি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ বেগম সালমা খাতুন। কেউই এখন মুখ খুলতে চাচ্ছেন না। 

অভিযোগে জানা যায়, চাকরিপ্রাপ্তদের মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লারই ২২ জন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সিরাজগঞ্জ জেলার প্রার্থীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে বলা ছিল। কিন্তু পরীক্ষায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার প্রার্থীরা যাতে বেশি নম্বর পেতে পারেন, সেজন্য বিচারকদের খাসকামরায় বসিয়ে তাদের পরীক্ষা নেয়া হয়। এই দুর্নীতির নেপথ্যে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও তৎকালীন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা নাজিরের হাত রয়েছে। 

এদিকে গোপন পরীক্ষার ছবি ফাঁস হওয়ার পর শাহজাদপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের নাজির রবিউল হাসান, তাড়াশ সহকারী জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মুনতাছির মামুন ও কাজীপুর সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী সাব্বির হোসেনের চাকরি স্থায়ীকরণ আটকে যায়। তবে আগেই ৩১ জনের চাকরি স্থায়ী হয়ে যায়।  ভুক্তভোগীরা সবার নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি জানাজানি হলে ওই তিন কর্মচারী সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে রাজি হননি। 

গতকাল রোববার সিরাজগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ এম আলী আহমেদ দুর্নীতির মাধ্যমে নিয়োগ বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি। তবে তাঁর দপ্তরের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আনোয়ার পাশা বলেন, সিনিয়র সহকারী জজ আহম্মেদ হুমায়ুন কবিরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ করছে। আর মোবাইল ফোনে কল ও হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা পাঠালেও সাড়া দেননি সিরাজগঞ্জের তৎকালীন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ফজলে খোদা নাজির।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে - dainik shiksha প্রাথমিকে ২০ হাজার শিক্ষকের পদ সৃষ্টি হচ্ছে স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত - dainik shiksha স্কুল শিক্ষাকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্ধিত করা উচিত নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প - dainik shiksha নতুন পাঠ্য বইয়ে থাকছে শহীদ আবু সাঈদ ও মুগ্ধের বীরত্বগাথার গল্প শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! - dainik shiksha শিক্ষার্থীদের দুপক্ষের দফায় দফায় সং*ঘর্ষে উত্তপ্ত চট্টগ্রাম! শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি - dainik shiksha শিক্ষাক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো - dainik shiksha ইএফটিতে বেতন দিতে এমপিও আবেদনের সময় এগোলো কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024220943450928