২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট দেশব্যাপী ৬৩ জেলায় জেএমবির সিরিজ বোমা হামলার ঘটনায় সাতক্ষীরায় ১৪ জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সাতক্ষীরার পাঁচটি স্থানে বোমা হামলার ঘটনায় পুলিশের দায়েরকৃত পাঁচটি মামলায় ১৪ জন আসামিকে সর্বোচ্চ ১৩ বছর ও সর্বনিন্ম ৩ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় মোট ১৬ জন আসামির মধ্যে একজন মারা গেছেন এবং একজনকে খালাস দেয়া হয়েছে। বুধবার (১০ ফেব্রয়ারী) দুপুরে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক মো: শরিফুল ইসলাম এই রায় দেন।সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, মনিরুজ্জামান, নুর আলী, গিয়াস উদ্দিন মুন্না, ইসমাইল ওরফে হাবিবুর রহমান, বেল্লাল হোসেন ওরফে আব্দুল্লাহ, মোন্তাজ ওরফে মমতাজ, মাহবুবুর রহমান, রাকিব হাসান, নাইম, ফকর উদ্দিন, আসাদুজ্জামান, মনোয়ার হোসেন, আসাদুর ও আনিসুর রহমান খোকন। খালাস পেয়েছেন আবুল খায়ের। এছাড়া মৃত্যুবরণ করেছেন নাসির উদ্দিন দফাদার। সাতক্ষীরা আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আব্দুল লতিফ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৭ আগস্ট দেশের ৬৩টি জেলায় একসাথে বোমা হামলা চালায় জেএমবি। এর মধ্যে সাতক্ষীরা শহরের শহীদ রাজ্জাক পার্ক, জেলা জজ আদালত চত্ত্বর, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত চত্ত্বর, বাস টার্মিনাল ও খুলনা মোড়সহ পাঁচটি স্থানে একযোগে এই বোমা হামলা ও নিষিদ্ধ লিফলেট ছড়ানোর ঘটনা ঘটে।
ঘটনার দিনই সাতক্ষীরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল চত্ত্বরে বোমা হামলাকারী শহরতলীর বাকালের দলিলউদ্দিন দফাদারের ছেলে নাসিরুদ্দিন দফাদার প্রত্যক্ষদর্শী বাকাল ইসলামপুর চরের পকেটমার রওশানের বিবরণ মতে ধরা পড়ে। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী সাতক্ষীরার রসুলপুরে জেএমবির ঘাঁটি চিহ্নিত করা হয়। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে পাঁচটি মামলা দায়ের করে।
পরবর্তীতে ২০০৭ খ্রিষ্টাব্দে সাতক্ষীরা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মোহাম্মদ বাদী হয়ে আরও একটি মামলা দায়ের করেন। এ সব মামলায় কমপক্ষে ১৯জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদেরকে ঢাকায় জেআইসিতে (জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল) এ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেওয়া ছাড়াও জেএমবির বহু গোপন তথ্য জানায় তারা। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয় সাতক্ষীরায়। গ্রেফতার হওয়া সব আসামি সাতক্ষীরার আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়।