ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে আইনগত তথ্য ও সেবা ডেস্ক স্থবির হয়ে আছে। উদ্বোধনের পর কয়েকমাস দুজন সেবাদানকারীকে বসতে দেখা গেলেও এখন কোনো সেবাই পাচ্ছেন না বিচারপ্রার্থীরা। দীর্ঘদিন অব্যবহৃত কেন্দ্রটি দখল করে নিয়েছেন আদালতের সুইপাররা।
গতকাল মঙ্গলবার সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঢাকার সিএমএম আদালতের নীচতলায় তিনদিকে কাঁচ ঘেরা একটি দৃষ্টিন্দন সেবাকেন্দ্র আছে। কিন্তু সেখানে কোনো সেবাদানকারী নেই। দুটো হাতলওয়ালা চেয়ার থাকলেও চেয়ার ও কেন্দ্রের মেঝে অব্যবহৃত পানির বোতল ও এনার্জি ড্রিংকসের বোতলে ভর্তি। বিচারপ্রার্থী ও আইনজীবীদের ফেলে দেওয়া পানির বোতল আদালতের সুইপাররা কুড়িয়ে এনে এখানে জমা করে রাখেন। অনেক বোতল জমা হলে এখান থেকেই বিক্রি করে দেন। বোতলগুলো নেয়ার জন্য প্লাস্টিকের বস্তাও আছে। আশেপাশে ময়লা জমে পরিবেশ নষ্ট হয়ে আছে।
সেবাকেন্দ্রের ভেতরে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ১২ অক্টোবর তৎকালীন চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রেজাউল করিম চৌধুরী এটি উদ্বোধন করেন। ফেডারেল রিপাবলিক অব জার্মানি ও যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তায় রুল অব ল’ প্রোগ্রাম, জিআইজেড বাংলাদেশ এর কারিগরি সহযোগিতায় এটি চালু হয়।
শুরুতে এখান থেকে বিচারপ্রার্থীরা আইনগত সেবা সংক্রান্ত তথ্য, মামলা সংক্রান্ত তথ্য, আদালতের বিভিন্ন অফিস সংক্রান্ত তথ্য, আদালতের এজলাসের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য, ফৌজদারি মামলার বিষয়ে তথ্য, ভিকটিমের সহায়তার বিভিন্ন তথ্য পেতেন। উদ্বোধনের পর দুজন সেবাদানকারি নিয়োগ দেয়া হয়। তারা কিছু দিন সেবাও দেন। কিন্তু তারপর থেকে সেবাকেন্দ্রটি পরিত্যক্ত। অব্যবহারের ফলে চেয়ারগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ডেস্কের গ্লাসে ময়লা জমেছে। জায়গায় জায়গায় রঙ উঠে গেছে। চারপাশ জমেছে ময়লার স্তূপ।
মামুন নামে এক বিচারপ্রার্থী দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, এখানে সেবাকেন্দ্র আছে তাই তো জানি না। কবে চালু ছিলো, আর কবে বন্ধ হয়ে গেছে তাও জানি না।
সিএমএম আদালতের আইনজীবী অ্যাডভোকেট জাহিদুর রহমান দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, প্রত্যেক আদালতে একটি সেবাকেন্দ্র থাকা উচিত। এতে বিচারপ্রার্থীরা উপকৃত হন। কিন্তু এটি বন্ধ থাকায় বিচারপ্রার্থীরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
ঢাকা সিএমএম আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাপ হোসেন দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমি একবছর হয় এখানে এসেছি। এটা কখন কেনো তৈরি করা হয়েছিলো, আমি জানি না।
একই আদালতের নাজির রেজোয়ান খন্দকার বলেন, এটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নই থাকে। এটা সুইপারদের দখলে থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
আদালতের লিগ্যাল এইড অফিসে যোগাযোগ করলে দায়িত্বপ্রাপ্ত বিচারককে পাওয়া যায়নি। তবে লিগ্যাল এইড অফিসের অফিস সহকারী জোবায়রা ফেরদৌসি বলেন, ওটা আমাদের প্রজেক্ট না। আমার জানা মতে, প্রকল্প শেষ হয়ে যাওয়ায় এটি পরিত্যক্ত হয়।
চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৫ম তলায় লিগ্যাল এইড অফিসের সামনে বাদী, ভিকটিম ও সাক্ষী হেল্প ডেস্ক বন্ধ কেনো জানতে চাইলে জোবায়রা বলেন, এ হেল্প ডেস্ক পরিচালনার দায়িত্ব পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। তাদের জনবল কম বলে তারা এটি আর পরিচালনা করেন না।