সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় নিহতদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছে নৌ-দুর্যোগ তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড। নিহত ১৪ জনের স্বজনদের দেড় লাখ করে মোট ২১ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সুবর্ণজয়ন্তী সম্মেলন কক্ষে তাদের চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিএনএ টেস্টে শনাক্ত হওয়া ১৪ নিহতের পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান। বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শুভ্রা দাসের সঞ্চালনায় চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিআইডব্লিউটিএ বরগুনা বন্দর কর্মকর্তা নিয়াজ মোহাম্মদ খান, হিসাব কর্মকর্তা আসাদুল হক, হিসাব সহকারী আমিনুর রহমানসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, চাকরি জীবনে এমন মর্মান্তিক দৃশ্য আমি দেখিনি। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় সংশ্লিষ্টরা ছাড়া এর বেদনা কেউ অনুভব করতে পারবে না। এরই অংশ হিসেবে এই পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিয়ে তাদের পাশে থাকার ক্ষুদ্র প্রয়াস মাত্র। লঞ্চ দুর্ঘটনা থেকে এড়াতে ত্রুটিপূর্ণ যান চলাচল নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে। প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে।
নিহতদের স্মরণে বরগুনার পোটককাখালী গণকবরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের দাবি জানান উপস্থিত সাংবাদিকরা। এর আগে ও শনাক্ত হওয়া ১৮ মরদেহের পরিবারকে নৌপরিবহন তহবিল ট্রাস্টি বোর্ড থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে চেক হস্তান্তর করা হয়েছে।
২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ২৪ ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় দগ্ধ হয়ে ৪৯ জনের মৃত্যু হয়।
জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, নিহত ১৯ জনের মরদেহ ওই দিনই স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং শনাক্ত না হওয়া অজ্ঞাত ২৩ মরদেহ বরগুনা সদর উপজেলার পোটকাখালী গণকবরে দাফন করা হয়েছিল। পরে স্বজনদের মধ্যে ৪৮ জনের ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে অজ্ঞাত ১৪ জনের মরদেহের পরিচয় মিললেও এখনো পরিচয় মেলেনি ৯ মরদেহের। এছাড়া জেলা প্রশাসনের তালিকায় এখনো নিখোঁজের সংখ্যা ৩০ এবং ৭ মরদেহের হদিস আজও মেলেনি।