রাজধানীর গ্রিন রোডে অবস্থিত সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় নবজাতকের মৃত্যুর পর মারা গেলেন লাইফ সাপোর্টে থাকা মা মাহবুবা রহমান আঁখি। রোববার (১৮ জুন) তিনি মারা যান।
শনিবার আঁখির স্বামী ইয়াকুব আলী জানিয়েছিলেন, শরীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। সারা শরীরে ফোসকা পড়ে গেছে। শরীর সম্পূর্ণ কালো হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ডায়ালাইসিসে কোনো কাজ হচ্ছে না। প্রস্রাব বন্ধ হয়ে গেছে। এখনো জ্ঞান ফেরেনি। স্বামীর এমন ঘোষণার একদিন পরই চলে গেলেন স্ত্রী মাহবুবা রহমান আঁখি।
নরমাল ডেলিভারি করাতে চেয়ে ফেসবুকে এ হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক ডা. সংযুক্তা সাহার নরমাল ডেলিভারি সংক্রান্ত ভিডিও ও পরামর্শ দেখে উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেই চাওয়া অনুযায়ী ব্যবস্থা নেন তার স্বামী ইয়াকুব আলী। আর সেটাই যেন কাল হলো তার জন্য। জন্মের সময়ই মারা যায় নবজাতক আর আঁখি এখন মৃত্যুশয্যায়। তার শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে।
গত শুক্রবার (৯ জুন) প্রসব বেদনা শুরু হয় আঁখির। সেই রাতেই ডেলিভারির জন্য ডা. সংযুক্তা সাহার অধীনে প্রসূতি আঁখিকে সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করালে ডা. সংযুক্তা সাহার বদলে ডেলিভারি করতে যান ডা. মিলি।
ডা. মিলি ওই প্রসূতির পেট কাটতে গিয়ে মূত্রনালি ও মলদ্বার কেটে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে প্রচণ্ড রক্তক্ষরণ হয়ে রোগী জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। অজ্ঞান অবস্থায় সিজার করে বাচ্চা বের করার পর বাচ্চার হার্টবিট কমে গেলে তাকে আইসিইউতে নেয়া হয়। কিছুক্ষণ পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নবজাতককে মৃত ঘোষণা করে।
এ ঘটনায় বুধবার (১৪ জুন) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ধানমন্ডি থানায় সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে মামলা করেন ইয়াকুব আলী। মামলার আসামিরা হলেন- সেন্ট্রাল হাসপাতালের ডা. মুনা সাহা (২৮), ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানা (৩৮), অধ্যাপক ডা. সংযুক্তা সাহার সহকারী মো. জমির, ডা. এহসান, ডা. মিলি ও সেন্ট্রাল হাসপাতালের ম্যানেজার পারভেজসহ আরও অজ্ঞাত ৫-৬ জন।
বুধবার এজাহার নামীয় দুই আসামি ডা. মুনা সাহা ও ডা. শাহজাদী মুস্তার্শিদা সুলতানাকে গ্রেপ্তার করে ধানমন্ডি থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত আসামিদের বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) আদালতে তুললে তাদের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।