সেশনজট : সাত কলেজ ছেড়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের নানাবিধ সমস্যার কারণে সাত কলেজ ছেড়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তন্মধ্যে তীব্র সেশনজট, ফলাফল প্রকাশে দীর্ঘসূত্রতা, অনাকাঙ্ক্ষিত ফলাফল বিপর্যয় উল্লেখযোগ্য। অনিশ্চিত ভবিষ্যত নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে নারাজ এসকল শিক্ষার্থী। শুধুমাত্র সাত কলেজে নয় হতাশায় পড়ে কেউবা শিক্ষা জীবনেরও ইতি টানছেন।  

দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত হওয়ার লক্ষ্যে রাজধানীর সাত কলেজে পড়তে এসেছেন লাখো শিক্ষার্থী। প্রান্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরেও অনেকেই পছন্দের বিষয় নিয়ে কিংবা রাজধানীকে অগ্রাধিকার দিয়ে ভর্তি হয়েছেন সাত কলেজে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত  বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কারণে আজ বিপর্যস্ত সাত কলেজের হাজারো শিক্ষার্থীর জীবন।

কবি নজরুল সরকারি কলেজের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র মেহেদী ইন্তেখাব আল মাহদী। সাত কলেজ ছেড়ে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে।
তিনি জানান, সাত কলেজ যেহেতু রাজধানী কেন্দ্রিক সেজন্য সাত কলেজে ভর্তি হওয়া। নোবিপ্রবি ও কুবিতে চান্স পেয়েও  শহরে অবস্থিত কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু একদিকে করোনার কারণে শিক্ষাব্যবস্থার ব্যাঘাত আর  সঠিক সময়ে রেজাল্ট প্রকাশ না করার কারনে হতাশ হয়ে পড়ি। ১ম বর্ষেই যেখানেই তিন বছর পেরিয়ে যায় সেখানে অনার্স শেষ করতে কতোটা সময় লাগবে নিশ্চিতরূপে জানা ছিল না। উপায়ন্তর না পেয়ে প্রাইভেটে ভর্তি হতে বাধ্য হই।

কবি নজরুল কলেজের আরেক শিক্ষার্থী আব্দুল্লাহ আল নোমান। সাত কলেজের ইংরেজি বিভাগ ছেড়ে ভর্তি হয়েছেন ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটিতে। তিনি বলেন, সেশনজটের ফলে অনেকটা সময় নষ্ট হয়েছে। এভাবে ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে ফেলতি চাইনি। তাই ভাল কিছু করার লক্ষ্যেই প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছি। কবি নজরুল কলেজেরই এমন আরো  অনেক শিক্ষার্থী সাত কলেজে ছেড়ে বিভিন্ন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছেন।

তিতুমীর কলেজের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সিনহা। বর্তমানে পড়াশুনা করছেন ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকে। সাত কলেজের ফাঁদে পড়ে শিক্ষাজীবনে ক্ষতি হয়েছে চারটি বছর। এ ক্ষতি পূরণ করবার নয়। কিন্তু তবুও সাত কলেজে ছেড়ে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হয়েছে নতুন কিছু করার। পড়াশুনা করে জীবনটাকে নতুন করে সাজানোর। তিতুমীর কলেজের আরো বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী রয়েছেন। যারা উপায়ন্তর খুঁজে না পেয়ে সাত কলেজ তথা পড়াশুনায় ছেড়ে দিয়েছে। তন্মধ্যে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের রায়হানুল ইসলাম জয়, নেহাল কাজী, ফেরদৌস সহ আরো অনেক শিক্ষার্থী রয়েছে।

ঢাকা কলেজের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আসিফ তালুকদার। তিনিও সাত কলেজ ছেড়ে ভর্তি হয়েছেন ডেফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে। তিনি বলেন, ভাল পরীক্ষা দেওয়ার পরে অপ্রত্যাশিত ফলাফল এসেছে। তাছাড়া করোনার কারণে প্রথম বর্ষেই তিন বছর অতিবাহিত হয়েছে। দিশেহারা হয়ে সাত কলেজ ছেড়ে দিয়েছি। ঢাকা কলেজের আরেক শিক্ষার্থী শফিকুল। তিনি ও একই কারণে সাত কলেজে ছেড়ে ভর্তি হয়েছেন ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে।

 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী - dainik shiksha নারীদের আইসিটিতে দক্ষ হতে হবে: শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল - dainik shiksha ডিগ্রি তৃতীয় শিক্ষকদের এমপিওভুক্তির সভা ৩০ এপ্রিল সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি - dainik shiksha সনদের কাগজ কীভাবে পায় কারবারিরা, তদন্তে নেমেছে ডিবি কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা : একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ - dainik shiksha বুয়েটে সিসিটিভি ফুটেজে ধরা পড়লো হিজবুত তাহরীরের লিফলেট বিতরণ সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি - dainik shiksha সাংবাদিকদের ঘুষ বিষয়ক ভাইরাল ভিডিও, ইরাব কোনো বিবৃতি দেয়নি ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা - dainik shiksha ফাঁসপ্রশ্নে প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ, নজরদারিতে যারা এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস - dainik shiksha এইচএসসির ফল জালিয়াতির অডিয়ো ফাঁস please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0032989978790283