শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) বিভিন্ন অনুষদে অনেক আগে থেকেই রয়েছে সেশনজট। এখানে এমনিতেই ৪ বছরের স্নাতক শেষ করতে সময় লাগত প্রায় ৫ বছর। মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা আরও প্রলম্বিত সেশনজটের কবলে পড়েছেন।
বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে বিভিন্ন লেভেলে অনলাইনে ক্লাস চললেও চূড়ান্ত কোনো পরীক্ষা হয়নি। আবার করোনাকালের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রশাসনের বিশেষ কোনো পরিকল্পনাও চোখে পড়ছে না।বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্রিকালচার, এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন, এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার অনুষদের তত্ত্বাবধানে দেওয়া হয় ৫টি ডিগ্রি। শিক্ষার্থীরা জানান, করোনায় বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের আগে তাদের কারও শ্রেণি পরীক্ষা চলছিল, কারও চূড়ান্ত পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছিল। আবার কারও চূড়ান্ত পরীক্ষা চলছিল। এখন পর্যন্ত এসব পরীক্ষা না নিতে পারায় সব অনুষদেই সেশনজট তীব্র হচ্ছে। প্রতিটি অনুষদের শিক্ষার্থীরাই দেড় থেকে দুই বছরের সেশনজটে রয়েছেন।
জানা গেছে, ৪টি অনুষদের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের স্নাতক ইতোমধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও তারা লেভেল-৩-ও অতিক্রম করতে পারেননি। এনিম্যাল সায়েন্স অ্যান্ড ভেটেরিনারি মেডিসিন, এগ্রিবিজনেস ম্যানেজমেন্ট ও ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার অনুষদের শিক্ষার্থীরা লেভেল-৩ এর সেমিস্টার-২ এর চূড়ান্ত পরীক্ষার জন্য অপেক্ষমাণ থাকলেও কৃষি অনুষদের শিক্ষার্থীরা এখনও লেভেল-৩ এর সেমিস্টার-১ এর চূড়ান্ত পরীক্ষাই শেষ করতে পারেননি। অন্যান্য শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের প্রায় একই অবস্থা।
আগামী ২৪ জুন থেকে শুধু কৃষি অনুষদের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের (২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে অন্য ৩ অনুষদের শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা গ্রহণের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে ওইসব অনুষদের শিক্ষার্থীরা তাদের স্নাতক শেষ করা নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।
আরও পড়ুন : দৈনিক শিক্ষাডটকম পরিবারের প্রিন্ট পত্রিকা ‘দৈনিক আমাদের বার্তা’
শিক্ষার্থীরা বলছেন, এভাবে অনির্দিষ্টকাল পরীক্ষা না নেওয়া হলে সেশনজট আরও দীর্ঘায়িত হবে। তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে পরিবারের অভিভাবকরাও দুশ্চিন্তায় আছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব হুসনাইন বলেন, 'শিক্ষাজীবন শেষ করা নিয়ে আমরা চরম হতাশায় ভুগছি। প্রশাসনের উচিত শীতকালীন ও গ্রীষ্ফ্মকালীন ছুটি বাতিল, সাপ্তাহিক বন্ধ দু'দিন থেকে এক দিন করা, সিলেবাস সংক্ষিপ্তকরণ, পরীক্ষার সংখ্যা কমানোসহ প্রয়োজনীয় বিষয় বিবেচনায় নিয়ে সেশনজট কমানোর রোডম্যাপ তৈরি করা।'
দৈনিক আমাদের বার্তার ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব ও ফেসবুক পেইজটি ফলো করুন
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক ড. ফরহাদ হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললে তারা সেশনজট কমিয়ে আনার চেষ্টা করবেন।