চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে সমুদ্রসৈকতে গোসলে নেমে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (আইআইইউসি) নিখোঁজ দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। আজ সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সমুদ্রসৈকত এরিয়ার কিছু দূর থেকে তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নৌ-পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে এসে সাগরের পানিতে সাঁতার কাটতে নেমে নিখোঁজ হন দুই শিক্ষার্থী।
সমুদ্রসৈকতে নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলেন মো. আলী হাসান মারুফ (২৩) ও এনায়েত উল্লাহ চৌধুরী (২২)। মারুফ আইআইইউসির শরিয়া ফ্যাকাল্টি (দাওরা) ডিপার্টমেন্টের
বাঁশবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. শওকত আলী জাহাঙ্গীর বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় আইআইইউসির তিন শিক্ষার্থী বাঁশবাড়িয়া সমুদ্রসৈকতে ঘুরতে আসেন। সন্ধ্যায় ভাটার সময় তিনজনেই সাঁতার কাটতে সমুদ্রে নামেন। এ সময় স্রোতের টানে মারুফ ও এনায়েত নামে দুই শিক্ষার্থী ভেসে যান। তবে নিরাপদে ওপরে উঠে আসেন একরাম হোসেন নামে অপর শিক্ষার্থী।
ইউপি চেয়ারম্যান আরও বলেন, সমুদ্র থেকে উঠে আসা শিক্ষার্থী একরাম হোসেন জানিয়েছেন, তাঁরা সাঁতার কেটে সমুদ্রে কিছু দূর যাওয়ার পর হঠাৎই স্রোতের টানে তলিয়ে যান তাঁর দুই বন্ধু। এ সময় তিনি সঙ্গীদের দেখতে না পেয়ে দ্রুত সমুদ্র থেকে ওপরে উঠে আসেন। পরে দৌড়ে সমুদ্রের পাড়ে থাকা দোকানগুলোয় গিয়ে নিখোঁজ দুই বন্ধুকে উদ্ধারে সহায়তা চান। শিক্ষার্থী নিখোঁজের খবর পেয়ে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়ার পাশাপাশি জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ এবং ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন।
ফোন করার কিছুক্ষণ পর ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এলেও তারা সমুদ্রে নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে অপারগতা প্রকাশ করেন। এ সময় তাঁরা শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে ডুবুরি দলের সহায়তা চেয়ে আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসে ফোন করেন। নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে আইআইইউসির শিক্ষক দল ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে কার্যক্রম শুরুর আগে স্থানীয় বাসিন্দারা শিক্ষার্থীদের সন্ধানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন।
সাগর উপকূলে খোঁজাখুঁজির একপর্যায়ে নিখোঁজের প্রায় চার ঘণ্টা পর সৈকত এরিয়া থেকে কিছু দূরে তাঁদের মরদেহ দেখতে পান। এ সময় স্থানীয়রা নৌপুলিশের সহায়তায় দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ সাগরপাড়ে নিয়ে আসেন।
নৌপুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এনামুল হক বলেন, নিহত দুই শিক্ষার্থীর ফুসফুসে পানি ঢোকার কারণে মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে এক শিক্ষার্থীর ফুসফুসে অধিক পানির ঢোকার কারণে তাঁর মুখ দিয়ে রক্তক্ষরণ হয়েছে। তাঁরা মরদেহ উদ্ধারের পর স্থানীয় চাঁন শিকদার জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে নিয়ে এসেছেন। মরদেহের সমস্ত শরীরে লেগে থাকা কাদামাটি সরাতে সেখানে তাদের গোসল করানো হয়। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর দুই শিক্ষার্থীর মরদেহ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অথবা তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।