সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিন আজ

দৈনিক শিক্ষাডটকম ডেস্ক |

বহু ভাষাবিদ, আধুনিক বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ঔপন্যাসিক, রম্যরচয়িতা ও ভ্রমণকাহিনিকার সৈয়দ মুজতবা আলীর জন্মদিন আজ। পাণ্ডিত্য এবং রম্যবোধে পূর্ণ এই বিশিষ্ট লেখক ১৯০৪ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে অবিভক্ত ব্রিটিশ ভারতে আসামের অন্তর্ভুক্ত সিলেটের করিমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। বাবা খান বাহাদুর সৈয়দ সিকান্দার আলী সাব-রেজিস্ট্রার ছিলেন। তার পৈতৃক ভিটা মৌলভীবাজার।

১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে ভর্তি হন। তিনি ছিলেন বিশ্বভারতীর প্রথম দিকের ছাত্র। এখানে তিনি সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, ফার্সি, হিন্দি, গুজরাটি, ফরাসি, জার্মান ও ইতালীয় ভাষা শিক্ষা লাভ করেন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি এখান থেকে বিএ ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বৃত্তি নিয়ে জার্মানির বন বিশ্ববিদ্যালয়ে যান। তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বে গবেষণার জন্য তিনি ডি.ফিল লাভ করেন ১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দে। ১৯৩৪-১৯৩৫ সময়ে তিনি মিসরে কায়রোর আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।

১৯২৭ থেকে ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত সৈয়দ মুজতবা আলী কাবুলের শিক্ষা দপ্তরে অধ্যাপনা করেন। ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দে বরোদা কলেজে ধর্মতত্ত্বের অধ্যাপক হিসাবে যোগ দেন। এখানে তিনি আট বছর কাটান। এরপর দিল্লির শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। পরে ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের বগুড়ার আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে এবং কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের খণ্ডকালীন প্রভাষকের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পঞ্চাশের দশকে কিছু দিন আকাশবাণীর স্টেশন ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন পাটনা, কটক, কলকাতা এবং দিল্লিতে। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি শান্তিনিকেতনে প্রত্যাবর্তন করেন। বিশ্বভারতীর ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের রিডার হিসাবে যোগ দেন।

শান্তিনিকেতনে পড়ার সময় সেখানকার বিশ্বভারতী নামের হাতে লেখা ম্যাগাজিনে মুজতবা আলী লিখতেন। পরে তিনি ‘সত্যপীর’, ‘ওমর খৈয়াম’, ‘টেকচাঁদ’, ‘প্রিয়দর্শী’ প্রভৃতি ছদ্মনামে বিভিন্ন দেশ, আনন্দবাজার, বসুমতী, সত্যযুগ, মোহাম্মদীতে কলাম লেখেন। তার বহু দেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা থেকে লিখেছেন ভ্রমণকাহিনি। লিখেছেন ছোটগল্প, উপন্যাস, রম্যরচনা। তার সাহিত্যকর্মের মধ্যে ‘দেশে বিদেশে’, ‘জলে-ডাঙ্গায়’, ‘পঞ্চতন্ত্র’, ‘ময়ূরকণ্ঠী’, ‘চাচাকাহিনী’, ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’, ‘ধূপছায়া’, ‘চতুরঙ্গ’, ‘ভবঘুরে ও অন্যান্য’, ‘বড়বাবু’, ‘রাজা-উজির’, ‘হিটলার’, ‘অবিশ্বাস্য, ‘শবনম’, ‘শহর ইয়ার’, ‘তুলনাহীনা’ অন্যতম।

১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নরসিং দাস পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হন। সাহিত্য ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য ২০০৫ খ্রিষ্টাব্দে তাকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়। ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দের ১১ ফেব্রুয়ারি সৈয়দ মুজতবা আলী মৃত্যুবরণ করেন।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি - dainik shiksha আগের নিয়মে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গ্রন্থাগারিক নিয়োগের দাবি শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ - dainik shiksha শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে বিশ্ব ব্যাংকের প্রতিনিধিদের সাক্ষাৎ মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার - dainik shiksha মাদকের গডফাদারদের ধরার নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা - dainik shiksha শিক্ষা প্রশাসনে বদলি আতঙ্কে নাহিদ-দীপু সিন্ডিকেটের ৯২ কর্মকর্তা দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! - dainik shiksha দীপু মনি-রতন সিন্ডিকেটের ফিরোজই শিক্ষা অধিদপ্তরের এ ডি! বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড - dainik shiksha বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই পক্ষের হাতাহাতি, সভা পণ্ড শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ - dainik shiksha শিক্ষকদের বদলির বিষয়ে সর্বশেষ অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন - dainik shiksha অগ্রসর সমাজ তৈরির লক্ষ্যই বাষট্টির শিক্ষা আন্দোলন দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0024318695068359