কবি ও সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুবার্ষিকী আজ। সৈয়দ শামসুল হক ১৯৩৫ খ্রিষ্টাব্দের ২৭ ডিসেম্বরে কুড়িগ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন ও মাতা হালিমা খাতুন। সৈয়দ সিদ্দিক হুসাইন পেশায় ছিলেন হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার।
সৈয়দ হক তার বাবা-মায়ের আট সন্তানের মধ্যে ছিলেন জ্যেষ্ঠতম। সৈয়দ হকের শিক্ষাজীবন শুরু হয় কুড়িগ্রাম মাইনর স্কুলে। এরপর তিনি ভর্তি হন কুড়িগ্রাম হাই ইংলিশ স্কুলে। তার পিতার ইচ্ছায় তিনি ঢাকায় চলে আসেন এবং ভর্তি হন পুরানো ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলে। ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি গণিতে লেটার নিয়ে ম্যাট্রিক পাস করেন।
প্রথমে পিতার ইচ্ছায় বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া করলেও পরবর্তীতে তিনি জগন্নাথ কলেজে মানবিক শাখায় ভর্তি হন এবং লজিকে লেটারসহ আইএ পাস করেন। অতঃপর তিনি ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে তৃতীয় বর্ষ পর্যন্ত লেখাপড়া করে আর পরীক্ষা দেন নি। ১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তার প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘তাস’, ১৯৫৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম উপন্যাস ‘এক মহিলার ছবি’, ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘একদা এক রাজ্যে’ প্রকাশিত হয়। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকের মধ্যে রয়েছে ‘নূরুলদীনের সারাজীবন’, ‘পায়ের আওয়াজ পাওয়া যায়’, ‘গণনায়ক’, ‘ঈর্ষা’। উপন্যাসের মধ্যে রয়েছে ‘খেলারাম খেলে যা’, ‘সীমানা ছাড়িয়ে’, ‘নীল দংশন’। কাব্যগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ‘পরানের গহিন ভিতর’, নাভিমূলে ভস্মধার’, ‘আমার শহর ঢাকা’, ‘বৃষ্টি ও জলের কবিতা’ প্রভৃতি। গান লিখেও খ্যাতি অর্জন করেছেন সৈয়দ হক।
ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের এই দিনে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন বাংলা সাহিত্যের এই দিকপাল। তাকে জন্মশহর কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের মূল ফটকের পাশে দাফন করা হয়।