চলচ্চিত্র পরিচালক সোহানুর রহমান সোহানের মৃত্যুতে যেখানে সংশ্লিষ্টরা শোক প্রকাশ করছেন, সেখানে চিত্রনায়িকা শাবনূর মৌন ক্ষোভ ঝাড়লেন তার বিরুদ্ধে।
কয়েক বছর ধরে অস্ট্রেলিয়ায় থাকছেন শাবনূর। পেয়েছেন দেশটির নাগরিকত্ব। সেখানে বসেই পেয়েছেন সোহানের মৃত্যুর খবর। তারপর সামাজিক মাধ্যমে তিনি লিখেছেন, ‘আহা জীবন! অত্যন্ত ভারাক্রান্ত হৃদয়ে বলতে হচ্ছে যে, বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা সোহানুর রহমান সোহান আর আমাদের মাঝে নেই (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। বলা দরকার, গতকাল সোহানুর রহমান সোহানের স্ত্রীও স্ট্রোক করে মারা গেছেন।’
শাবনূর জানান, মৃত্যুর আগে মিডিয়াতে তার নামে নানা বদনাম করেছেন সোহান। সেই প্রসঙ্গ তুলে এ অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘সোহান আঙ্কেল যাবার আগে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে কিছু উল্টা-পাল্টা ও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন। আমাকে সমাজে হেয় প্রতিপন্ন ও আমার সম্মানহানি করে গেলেন। অনেকেই তার কটু কথার বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিতে বলেছিলেন। আমি চাইলেই মিডিয়াতে তার এই মিথ্যা অপবাদের প্রতিবাদ করতে পারতাম। এর আগেও উনি কোনো এক ইন্টারভিউতে আমার বিরুদ্ধে এ রকম বাজে মন্তব্য করেছিলেন। তখনও আমি তার অপবাদের বিরুদ্ধে কোনো পাল্টা জবাব দেইনি।’
সোহানকে পিতৃতুল্য উল্লেখ করে এ অভিনেত্রী আরও লেখেন, ‘সোহান আঙ্কেল অনেক সিনিয়র, আমার পিতৃতুল্য। আমি কোনো অন্যায় করলে উনি আমাকে শাসন করতে পারতেন। এইতো, কিছুদিন আগেও তার সঙ্গে আমার ফোনে আলাপ হয়েছিল। তখন তাকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আঙ্কেল আপনি কি কোনো কারণে আমার ওপর রাগ করে আছেন? আপনি যে আমার বিরুদ্ধে মিডিয়াতে উল্টা-পাল্টা কথা বলতেছেন। তিনি তখন বললেন, তুই আমাদের ইন্ডাস্ট্রির মেয়ে, আমার মেয়ের মতো, তোর ওপর কেন রাগ করতে যাব। আর আমিতো তোর বিরুদ্ধে কোনো বাজে কথা বলিনি। এরপরে আমার বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে তিনি আবারও মিথ্যা অপবাদ দিয়ে গেলেন।’
শাবনূর মনে করেন, অন্য কোনো ব্যক্তির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে তার বিরুদ্ধে বিষদগার করেছেন সোহান। তিনি লেখেন, ‘কিন্তু আমার একটাই দুঃখ, আমি জানতে পারলাম না উনি কেন বা কার চক্রান্তে প্রভাবিত হয়ে আমার পেছনে উঠে-পড়ে লেগেছিলেন। যাইহোক, আমি সবার উদ্দেশে একটা কথা বলতে চাই, ভাই জীবনটা খুবই ছোট্ট। এত দাঙ্গা-ফ্যাসাদ করে কী লাভ? একে অন্যের বিরুদ্ধে না লেগে আসুন আমরা সবাই মিলে মিশে থাকি। গন্তব্যতো একটাই, সবাইকে এই পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করতে হবে।’
সবশেষ এই নায়িকা লেখেন, ‘যেহেতু ক্ষমা একটি মহৎ গুণ, তাই আমি উনাকে মাফ করে দিলাম। আমি আঙ্কেল ও তার স্ত্রীর রুহের মাগফিরাত কামনা করছি।’
এর আগে বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ঘুমের মধ্যে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়ে মারা যান সোহানুর রহমান সোহান। একদিন আগে মৃত্যু হয় তার স্ত্রী প্রিয়া রহমানের। টাঙ্গাইলে স্ত্রীর কবরের পাশে তাকে শায়িত করা হবে তাকে।