স্কুল নিয়ে ‘হঠকারি’ সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

দৈনিকশিক্ষাডটকম, রাজশাহী |

দৈনিকশিক্ষাডটকম, রাজশাহী : দেশের বিভিন্ন স্থানে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। রাজশাহীতে মঙ্গলবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে তাপমাত্রা থাকলে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ ধরা হয়। সেই হিসেবে রাজশাহী জেলায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ চলছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিন্ধান্ত মোতাবেক তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে থাকলে মাধ্যমিক ও প্রাথমিকের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। তবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার আদেশ জারির হটকারি সিদ্ধান্তে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন রাজশাহী জেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

গত ২০ জানুয়ারি রাজশাহীতে তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি নিচে নেমে আসায় হঠাৎ রাত ১০টার দিকে রাজশাহী অঞ্চলের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. শরমিন ফেরদৌস চৌধুরী সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানদের চিঠি দিয়ে ২১ ও ২২ জানুয়ারি পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রাখার সিন্ধান্তের কথা জানান। একইভাবে শুধুমাত্র ২১ জানুয়ারি একদিনের জন্য পাঠদান বন্ধের নির্দেশনা প্রদান করেন রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম। ওই রাতেই তাড়াহুড়ো করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা স্কুলের ফেসবুক পেজে বা ব্যাক্তিগত আইডি থেকে পাঠদান বন্ধর কথা জানানো হয়। তবে রাতে এই নির্দেশনা দেয়ায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা না জানতে পেরে তীব্র শীত উপেক্ষা করে স্কুলে এসে উপস্থিত হয়।

মঙ্গলবার সকাল ৯টায় রাজশাহীর তাপমাত্রা ৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসার পর রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম সকাল সাড়ে ৯টার দিকে স্কুলে পাঠদান বন্ধ রাখার কথা জানান। কিন্তু এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা স্কুলে উপস্থিত হয়ে যায়। পরে শিক্ষকরা এই নির্দেশনা জানার পর তড়িঘরি করে শিক্ষার্থীদের বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা জানান। তবে মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুলে পাঠদান মঙ্গলবার অব্যাহত ছিলো। রাজশাহী জেলার মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের এমন হটকারি সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।

হয়রানির ভয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে শিক্ষকরা জানান, স্যারদের এমন হটকারি সিদ্ধান্তে আমরা বিভ্রান্তিতে পড়েছি। প্রচন্ড ঠান্ডায় শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে আসার পর জানতে পারছি স্কুলে পাঠদান বন্ধ করা হয়েছে। এতে করে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কোনো কোনো অভিভাবক আমাদের কটু কথাও শুনিয়ে দিচ্ছে। এমন সিন্ধান্ত পরিকল্পনা মাফিক আগের দিন জানানোর অনুরোধ করেন তারা।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সাইদুল ইসলাম বলেন, আসলে আবহাওয়ার বিষয়টি কখনো বেশি হচ্ছে, আবার কখনো কমে যাচ্ছে, তাই সিন্ধান্ত নেয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও আমরা আমাদের নিজেদের মত সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ মোতাবেক সিদ্ধান্ত নিতে হয়। গত সোমবার আমরা আবহাওয়া অফিসের সাথে কথা বলেই পাঠদানের জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু সকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় হঠাৎ করেই ডিডি স্যারের নির্দেশনায় এই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। আমরা চেষ্ঠা করছি আগের দিনে এসব বিষয়গুলো সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেয়ার।

রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন বলেন, গত সোমবার আবহাওয়া অফিসের সাথে কথা বলেছিলাম। তারা বলেছিলো ১০ ডিগ্রির নিচে তাপমাত্রা নামবে না, তাই পাঠদান বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। তারা যেভাবে আমাদের বার্তা দিচ্ছে, সেভাবে সিন্ধান্ত নিচ্ছি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0031278133392334