স্কুল যখন সাইনবোর্ড, স্কুল যখন হাতিয়ার এবং সিপিডির প্রতিবেদন

মাছুম বিল্লাহ |

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক তৃতীয়াংশের বেশি শিক্ষাথী প্রাইভেট টিউটরের কাছে পড়ে। প্রাইভেট টিউটরের কাছে না পড়লে শিক্ষার্থীরা অপ্রত্যাশিত সমস্যায় পড়েন। এমনিক প্রাইভেট টিউটরের কাছে না পড়লে শিক্ষার্থী ফেল করবে এমনটিও মনে করেন অনেক অভিভাবক। শিক্ষা বিষয়ক দেশের একমাত্র প্রিন্ট পত্রিকা দৈনিক আমাদের বার্তায় সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমন তথ্য জানা গেলো।  সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্লাটফর্ম দেশের উত্তরাঞ্চলের তিনটি জেলা-গাইবান্ধ, ঠাকুরগাঁও ও নীলফামারীর ৩০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী , অভিভাবকসহ ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও নাগরিক সমাজের মোট ৪০৮জনের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শ্রেণিকক্ষ নেই বলে জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ ( সিপিডি) এর গবেষণা প্রতিবেদনে। 

বিগত পাঁচ বছরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বাজেট ও জিডিপির তুলনায় বরাদ্দ কমানো হয়েছে বলেও সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। এতে আরো বলা হয়েছে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দ ছিল মোট বাজেটের ৬দশমিক ৫১শতাংশ। ২০২৩-২৪  বছরের বাজেটে তা কমিয়ে আনা হয়েছে ৪দশমিক ৫৬শতাংশে। এছাড়াও মোট সরকারি ব্যায়ের একটি অংশ হিসেবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যয় ২০২৬-১৭অর্থবছরে ৬দশমিক ৩৮শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৪ দশমিক ৫৩শতাংশ হয়েছে। এই ৫ বছরে জিডিপির তুলনায়ও বরাদদ্ কমেছে।

দেশের পায় ৬৬হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২০ হাজার কিন্ডারগার্টেন ও ২১ হাজারের বেশি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রায় একই চিত্র। উচচ মাধ্যমিক কলেজগুলোরও প্রায় একই অবস্থা। পাঠক্রমে পরিবর্তন এসেছে, বইয়ে পরিবর্তন এসেছে কিন্তু প্রতিষ্ঠানে পড়ানোর ধরন আর কোচিং বাণিজ্যে খুব একটি পরিবর্তন আসেনি। এমনকি বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা নানা কৌশলে শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন। অনেক স্কুলে স্কুলের টিচারের কাছে না পড়লে ফেল করিয়ে দেন । আর পড়লে পরীক্ষার প্রশ্ন পাওয়া থেকে শুরু করে বেশি নম্বর পাওয়ার সুবিধা রয়েছে । ঢাকাসহ বড় বড় শহরের কিছু প্রাইভেট স্কুল রয়েছে যেগুলোতে শিক্ষকদের বেতন দেওয়া হয় খুবই সামান্য, এমনকি ৫০০টাকা। এসব বিদ্যালয়ে কিছু শিক্ষক শিক্ষকতা করেন শুধু শিক্ষার্থী ধরার জন্য, স্কুল একটি হাতিয়ার, এখানে স্কুল একটি সাইনবোর্ড।

এটি সমাজের একটি বাস্তবতা। এ নিয়ে আলোচনা প্রয়োজন, শুধু শিক্ষকদের দায়ী করলে চলবেনা।  মাধ্যমিক পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ের শিক্ষকরা কোচিং করে কেউ কেউ মোটা অংকের অর্থ উপাজর্ন করেন। আমাদের সমাজে ডাক্তারগন যদি প্রাইভেট প্রাকটিস করতে পারেন, শিক্ষকরা কেন পারবেন না? তবে, অনন্য ব্যতিক্রমধর্মী কিছু বিদ্যালয় আছে যেখানে এ ধরনের প্রাইভেট নেই। ফার্মগেটের বাচা নামক ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে কোচিং একেবাইে নেই।কোন শিক্ষার্থী প্রাইভেট পড়ছে  এ খবর পেলে কর্তৃপক্ষ তাদের স্কুল থেকে বের করে দেয়। চলতি বছরের শুরুতে ‘ও’ লেভেলের আট শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে যাওয়ার কারণে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে। এখানে প্রতিটি সেকশনে ২৫ জন করে শিক্ষার্থী আছে। কেউ কোন বিষয়ে দুর্বল থাকলে তাকে বাসায় গিয়ে টাকার বিনিময়ে না পড়িয়ে শিক্ষকরা ক্লাসে অথবা আলাদাভাবে ক্লাসের বাইরে তাকে পড়া বুঝিয়ে দেন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের শতবার প্রশ্ন করলেও শিক্ষকগন রেগে যাননা, বরং বুঝিয়ে দেন। অধ্যক্ষ নিজেও দুর্বল শিক্ষার্থী নিয়ে বসেন। এটি হচেছ একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নমুনা। দেশের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়গুলো এখান থেকে অনেক কিছু শিখতে পারে, তাদের অনুসরণ করতে পারে।

আমরা দেখতে পাই  দেশের গড়পড়তা প্রায় সব স্কুলেই একটি কক্ষে কমপক্ষে ৫০ জন থেকে ৭০ জন পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে ক্লাস করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের কাজ শুধু পড়া দেওয়া এবং দু-চারজনকে তা ধরা। একটি বিষয়ে বিস্তারিতভাবে বুঝিয়ে বলা, দুর্বলদের বাড়তি যতœ নেওয়া, কঠিন বিষয়ে বেশি সময় দেওয়ার  সময় বা রীতি কোনটিই  স্কুলে নেই। যে কোন বিষয়ই  হোক-ক্লাসের  সময় ৪৫মিনিট। ওই সময়ের মধ্যে খুব সামান্য অংশ শিক্ষার্থীদের বোঝাতে ব্যয় করেন শিক্ষক। বোর্ডে দু-একটি অঙ্ক করে দেখানো, রিডিং পড়া ও বাড়ির কাজ দেখায় সময় চলে যায়। তার মধ্যে থাকে ডিসিপ্লিনারি বিষয়, একটি শিক্ষার্থী হয়তো শীস বাজালো, একজন শিক্ষার্থী চিৎকার করলো, দু’একজন শিক্ষার্থী সময়মতো শ্রেণিকক্ষে ঢুকলো না এইসব বিষয় ম্যানেজ করতে অনেক সময় নষ্ট হয়। ঘন্টা পড়লে শিক্ষক ক্লাস ছাড়েন কারন তারতো অন্য ক্লাস আছে। তাই পরীক্ষার আগে বাড়তি যত্নের নামে স্কুলেই কোচিংয়ের ফাঁদ দেখা যায়। আর বিদ্যালয় তো কোন বিচিছন্ন কোন দ্বীপ নয়, সামাজের হাজার অনাচারের মধ্যে এখানে আচার কোথা থেকে আসবে সেটিও চিন্তার বিষয়। বিদেশে অজস্র অর্থ পাচার করা, ব্যাংক খালি করা- এগুলো প্রতিদিন সংবাদপত্রসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় সয়লাব হচেছ যেগুলো শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভবাকসহ সবাই দেখছেন। কাজেই এর মধ্যে আমরা কিভাবে আশা করতে পারি যে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পুরো বিপরীত চিত্র বিরাজ করবে? কে করবেন? কারা করবেন? কিভাবে করবেন? অবৈধ উপায়ে যে সব বাবা-মা অর্থ উপার্জন করেন তাদের সন্তানদের কাছ থেকে কিংবা তাদের থেকে বিদ্যালয় কি ধরনের আচরণ আশা করতে পারে?

প্রস্তাবিত শিক্ষা আইনের খসড়ার বলা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নির্ধারিতসময়ের বাইরে শিক্ষকদের কোচিং প্রাইভেটের সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক তার নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট পড়াতে পারবেন না।কোচিং প্রাইভেট একেবারে বন্ধ করা যাবেনা। কিছু শিক্ষার্থী থাকে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের চেয়ে তূলনামূলক দুর্বল। আবার সব শিক্ষার্থীর মা-বাবার পক্ষে পড়াশোনার বিষয়ে সন্তানকে প্রয়োজনীয় সময় দেওয়া সম্ভব হয়না। এ ক্ষেত্রে তারা কোচিং-প্রাইভেট পড়তেই পারে। কিন্তু সমস্যা হলো, অনেক শিক্ষক ক্লাসে ঠিকমতো না পড়িয়ে তাদের কাছে শিক্ষার্থীদের কোচিং-প্রাইভেট পড়তে বাধ্য করেন, যা অনৈতিক।এটি কিভাবে বন্ধ করা যায় সেটি নিয়ে চিন্তা করা যায়।

সেই ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে শিক্ষা আইনের খসড়া নিয়ে আলোচনা চলছে। অভিযোগ আছে নোট, গাইড বা সহায়ক বই এবং কোচিং প্রাইভেটের মতো কিছু বিষয় রাখা না রাখা নিয়েই আইনের খসড়াটি এত দীর্ঘ বছর ধরে ঘুরপাক খাচেছ। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের করা খসড়া অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট টিউশনের মাধ্যমে পাঠদানের জন্য কোচিং সেন্টার পরিচালনা করা বা কোচিং সেন্টারে শিক্ষকতা করা নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে না। তবে কোচিং সেন্টারে কোন শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করতে পারবেন না।এমনকি কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষক নিজ প্রতিষ্ঠানের কোন শিক্ষার্থীকে প্রাইভেট  পড়াতে পারবেন না। কোচিং চালাতে  নিবন্ধন নিতে হবে।তবে সরকার নির্ধারিত অর্থের বিনিময়ে ও অভিভাবকদের সম্মতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণি কার্যক্রমের বাইরের সময় অতিরিক্ত ক্লাসের ব্যবস্থা করা যাবে। অবশ্য এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই শিক্ষা মন্তণালয়ের নির্বাহীআদেশ রয়েছে। কিন্তু সেটি যথাযথভাবে মানা হয়না।১৯৮০খ্রিষ্টাব্দে করা একটি আইনেও অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত  নোট-গাইড নিষিদ্ধই আছে। এ জন্য এখন নোট গাইডের পরিবর্তে অনুশীলন বা সহায়ক পাঠ্যবই নামে চলছে। প্রস্তাবিত আইনেও সরকারি অনুমোদন নিয়ে সহায়ক বই বার্ধাঁই, প্রকাশ বা বাজারজাত করার সুযোগ রাখা হয়েছে। তবে, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা কোন শিক্ষক শিক্ষার্থীদের সহায়ক বাই কেনা বা পাঠে বাধ্য করতে পারবেন না।
কোচিং নিয়ে আমাদের অনেক আলোচনা ও সমালোচনা আছে কিন্তু আমাদের মনে রাখতে হবে, একজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে যখন পাঠদান করবেন তার একার চেষ্টায় কিন্তু পুরো একটি শিক্ষার পরিবেশ সৃষ্টি করা সম্ভব হয়না। যেমন ক্লাস শুরুর কয়েক মিনিটি পূর্বে সবাইকে ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে। এটি শুধু শিক্ষকের বিষয় নয়। এখানে বিদ্যালয়, প্রশাসন , অভিভাবক, কমিউনিটি এবং সরকারের বিশাল দায়িত্ব রয়েছে। তারা সবাই দায়িত্ব ঠিকমতো পালন করলে শিক্ষক অনেকটাই স্বস্তির সাথে পড়াশুনা করাতে পারেন, তাতে একটি ক্লাস ফলপ্রসূ হয়। ক্লাসগুলো ফলপ্রসূ হলে প্রাইভেট টিউশন এমনিতেই কমে যাবে। এসব বিষয় নিয়ে খুব একটা বেশি আলোচনা হতে দেখা যায়না। আর একটি বিষয় হচেছ, শিক্ষকদেরতো অর্থের প্রয়োজন আছে সেটি যদি তারা সৎ উপায়ে উপার্জন করতে পারেন সেটি নিয়ে বেশি সমালোচনা না শিক্ষকদের আর্থিক দিকটিও দেখতে হবে। আবার শিক্ষার্থীরা যাতে উপযুক্ত শিক্ষা গ্রহন করতে পারে বাস্তবতার নিরিখে সেটিও দেখতে হবে।


লেখক : শিক্ষা বিশেষজ্ঞ এবং লিড-এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ টিম, দৈনিক শিক্ষাডটকম ও দৈনিক আমাদের বার্তা 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0026009082794189