দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক: লক্ষ্মীপুরে স্কুলছাত্র রবিউল ইসলাম শিমুল হত্যা মামলায় ৬ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা ও অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার দিকে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার আসামি তাজল ইসলাম তাজু ভূঁইয়াকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত। আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াস হোসেন উপস্থিত থাকলেও অন্যরা পলাতক রয়েছে।
দণ্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াস চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের দেওপাড়া গ্রামের মৃত সিরাজ মিয়ার ছেলে, সদর উপজেলার বশিকপুর গ্রামের মাসুদুর রহমান কালা মাসুদ, উত্তর জামিরতলী গ্রামের নুর মোহাম্মদ লিটন, পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের সাদ্দাম, আনোয়ার হোসেন সাদ্দাম ও নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের আমান উল্যাহপুর ইউনিয়নের গোবিন্দের খিল গ্রামের শাহরিয়ার রাশেদ। খালাসপ্রাপ্ত তাজু ভূঁইয়া চন্দ্রগঞ্জের আমানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের আব্দুল মান্নানের ছেলে ও চন্দ্রগঞ্জ থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সদস্য সচিব।
নিহত শিমুল প্রতাফগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র ছিলেন। শিমুলের বাবা আব্দুর রাজ্জাক ও মা শিরি আক্তার মারা যাওয়ার পর থেকে সে নানার বাড়িতে থাকতো।
এজাহার সূত্র জানায়, নিহত শিমুল বাদী কাজী মামুনুর রশীদ বাবলুর ভাগিনা। ২০১৪ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল বাবলু অসুস্থ্য হয়ে লক্ষ্মীপুরে একটি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। বাড়িতে তাঁর মা-ভাবি ও ভাগিনা ছিলো। ওইদিন রাত সাড়ে ৯ টার দিকে অস্ত্রধারী মুখোশধারীরা চন্দ্রগঞ্জ দেওপাড়া গ্রামের বাড়িতে ঢুকে। তাদের ভয়ে তার মা ও ভাবি পালিয়ে যায়। কিন্তু এতিম ভাগিনা শিমুল পালায়নি। তখন সন্ত্রাসীরা ঘরের আসবাবপত্র ভাংচুর করলে শিমুল বাধা দেয়। এতে তারা শিমুলকে তুলে নিয়ে দেওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় গুলি করে হত্যা করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালে পাঠায়। ঘটনার ১৪ দিন পর ৫ মে বাবলু বাদী হয়ে লক্ষ্মীপুর সদর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার প্রায় ৬ বছর পর ২০২০ খ্রিষ্টাব্দের ৪ মার্চ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নোয়াখালী আদালতে ৭ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট দাখিল করেন। দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেয়।
জেলা জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, রায়ের সময় দণ্ডপ্রাপ্ত ইলিয়াস আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য ৫ জন পলাতক রয়েছেন। তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।