ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে স্থান পেয়েছে একটি ঈদগাহের আঁকা ছবি। যেখানে দেখা যাচ্ছে, সুদৃশ্য মিনার ও ঈদগাহ কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে পাঞ্জাবি-টুপি পরা ধর্মপ্রাণ মুসল্লি।
এরইমধ্যে কোলাকুলি চলছে, কেউ আবার কোরবানির গরু নিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে আঁকা এই ছবির শিল্পী কে?
জানা গেছে, দিনাজপুর বধির ইনস্টিটিউটের ৮ম শ্রেণীর ছাত্রী আঁখির তুলিতে ফুটে উঠেছে এই ঈদগাহের চিত্র। সে বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী। দিনাজপুরের গোর-এ শহীদ বড় ময়দানের ছবি এঁকেছে সে। এশিয়া মহাদেশের সর্ববৃহৎ ঈদগাহ মিনার ও ঈদ জামাত এটি।
আঁখিরি আঁকা ছবিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে দেশবাসীকে দেয়া ঈদ শুভেচ্ছা কার্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
আঁকিবুকির পাশাপাশি লেখাপড়ায় বেশ মেধাবী আঁখি। দিনাজপুর শহরের পশ্চিম বালুয়াডাঙ্গা নতুন পাড়ায় বাবা-মার সঙ্গে থাকে আঁখি।
দিনাজপুর ঈদগাহ মিনার নির্মাণের মূল পরিকল্পনাকারী জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি শুভেচ্ছা কার্ডটি নিয়ে শনিবার (২৪ জুন ) সন্ধ্যায় আঁখির বাসায় যান। আঁখির হাতে শুভেচ্ছা কার্ডটি তুলে দেন তিনি।
সেই সঙ্গে আর্থিক সহযোগিতা করেন হুইপ। এ সময় আঁখির বাবা মো. আনারুল ইসলাম ও মাতা শাহানাজ পারভিন উপস্থিত ছিলেন।
হুইপ ইকবালুর রহিম বলেন, আঁখি প্রমাণ করেছে বাক প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। সঠিক তত্ত্বাবধানে তারা সম্পদে পরিণত হচ্ছে। ভবিষ্যতেও আঁখির মতো অনেক প্রতিভা দেশের জন্য সুনাম বয়ে আনবে। আঁখির এই প্রতিভা দিনাজপুরবাসীকে গর্বিত করেছে। দিনাজপুরবাসীর পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শিল্পী আঁখিকে অভিনন্দন জানান তিনি।
আঁখির বাবা আনারুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, আমার বাক প্রতিবন্ধী মেয়ের মেধাকে শুভেচ্ছা কার্ডের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়ায় আমরা ঋণী হয়ে থাকলাম। আঁখির এ সমস্যাটি বহু চিকিৎসককে দেখিয়েছি। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। চিকিৎসকরা বলছে আঁখিকে এভাবেই সারাজীবন থাকতে হবে। তবে আমরা বাবা-মা হিসেবে চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি। যদি কখনো আল্লাহ রহমত দান করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ খ্রিষ্টাব্দ থেকে উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ দিনাজপুর গোর এ শহীদ বড় ময়দানে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এবার ঈদ জামাতে দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের অংশ নিতে দুইটি স্পেশাল ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়।