স্কুলে ঢুকে তিন শিক্ষককের ওপর হামলা

দৈনিক শিক্ষাডটকম, নাটোর |

দৈনিক শিক্ষাডটকম, নাটোর : এক তরুণকে আটকে রাখার কারণে নাটোরের সিংড়ায় একটি বিদ্যালয়ের ভেতরে ঢুকে তিন শিক্ষককে মারধর করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিলদহর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কমন রুমে ওই তরুণের বাবার নেতৃত্বে স্বজনেরা এ ঘটনা ঘটান। ওই তরুণ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে মেরে রক্তাক্ত জখম করায় তাঁকে আটকে রেখেছিলেন ওই তিন শিক্ষক। হামলাকারীরা বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির আত্মীয় বলে তাঁরা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে।

আহত ওই শিক্ষকেরা হলেন ওই বিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক সাইদুর রহমান, রেজাউন নবী ও শফিউল আলম। অভিযুক্ত তরুণের নাম রাহুল হোসেন (১৯)। তাঁর বাবা মামুন হোসেন (৪২) বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদের মামা ও বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি শাহাদত হোসেনের ভাতিজা। 

বিদ্যালয়ের অন্তত দুজন শিক্ষক ও দুজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ বেলা দেড়টার দিকে রাহুল হোসেন পূর্ববিরোধের জের ধরে বিলদহর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমানকে মেরে নাক ফাটিয়ে দেন। এতে সে রক্তাক্ত হলে কয়েকজন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী রাহুলকে ধরে এনে অফিসকক্ষে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে রাহুলের বাবা মামুন হোসেন ও তাঁর স্বজনেরা বিদ্যালয়ে এসে শিক্ষকদের কমন রুমে ঢুকে জ্যেষ্ঠ শিক্ষক সাইদুর রহমান, রেজাউন নবী ও শফিউল আলমকে কিলঘুষি মেরে আহত করেন। একপর্যায়ে তাঁরা রাহুলকে ছাড়িয়ে নিয়ে বাড়িতে চলে যান।

ঘটনার সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ সিংড়া উপজেলা সদরে একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ছিলেন। পরে ঘটনাটি তাঁকে ও বিদ্যালয়ের সভাপতিকে জানানো হলে তাঁরা কেউ বিদ্যালয়ে না এসে আগামীকাল বুধবার বিষয়টি ফয়সালা করবেন বলে ভুক্তভোগী শিক্ষকদের জানান। এ নিয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে।

আহত তিন শিক্ষকের একজন সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের একজন শিক্ষার্থীকে মেরে নাক দিয়ে রক্ত বের করে দিয়েছিল রাহুল হোসেন। এ জন্য আমরা তাকে বিদ্যালয়ের অফিসে বসিয়ে রেখেছিলাম। তার অভিভাবকেরা এলে আলোচনা করে সমাধানের উদ্দেশ্যেই বসিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তার বাবাসহ স্বজনেরা বিদ্যালয়ে এসে আমাদের ওপর চড়াও হন এবং মারপিট করেন।’ সাইদুর রহমান বলেন, ‘আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছি। তবে কারও কাছে বিচার দিইনি। কারণ, আমরা অন্য গ্রাম থেকে শিক্ষকতা করতে এসেছি। তা ছাড়া হামলাকারী মামুন হোসেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির আত্মীয়। এখন দেখি, তাঁরা কী করেন।’

প্রধান শিক্ষক আবদুর রশিদ মুঠোফোনে বলেন, ‘আমি ঘটনার সময় বিদ্যালয়ে ছিলাম না। ঘটনা শোনার পর বিষয়টি সভাপতিকে জানিয়েছি। বুধবার বিদ্যালয়ে সব পক্ষকে নিয়ে বসে ফয়সালা করব।’ অভিযুক্তরা তাঁর ও সভাপতির আত্মীয় হওয়ায় কি বিষয়টি থানায় জানানো হয়নি, এমন প্রশ্নের জবাবে আবদুর রশিদ বলেন, ‘না, কাজটা খারাপ করেছে। অপরাধ প্রমাণিত হলে তাদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে। স্বজন বলে ছাড় পাবে না।’ 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কমিটি সংক্রান্ত শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত - dainik shiksha প্রাথমিকের সাড়ে ৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি - dainik shiksha আন্দোলন স্থগিত তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীদের, ৭ দিনের মধ্যে কমিটি পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha পাঠ্যবই নির্ভুল করা হচ্ছে: গণশিক্ষা উপদেষ্টা আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির - dainik shiksha আন্দোলনে আহত শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি মওকুফের নির্দেশ ইউজিসির কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি - dainik shiksha পদত্যাগ করেছেন সেই তিন বিতর্কিত বিচারপতি কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান - dainik shiksha ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির বিচার হওয়া উচিত: সলিমুল্লাহ খান বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল - dainik shiksha বিচারকের সামনে যে হুমকি দিলেন কামরুল please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0039620399475098