স্কুলে যেতে নৌকাই ভরসা

নিত্যানন্দ হালদার, মাদারীপুর |

প্রায় চার কিলোমিটার সড়কের অবস্থা বেহাল। খালে নেই সেতু। জরাজীর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয় শিক্ষার্থী ও জনসাধারণকে। তাই মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের দুটি বিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থীসহ এলাকার প্রায় দেড় হাজার মানুষের যাতায়াতের অন্যতম ভরসা হয়ে উঠেছে ডিঙ্গি নৌকা।  আসছে শ্রাবণ মাসের প্রথম দিকে সড়কটি পানিতে ডুবে গেলে পুরো বর্ষাকাল নৌকা ছাড়া যাতায়াতের কোনো উপায়ই থাকবে না তাদের।  

স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের ৬ থেকে ৮ মাস শিক্ষার্থীদেরকে ডিঙ্গি নৌকা আর বাকি মাসগুলোতে জল-কাদা মাড়িয়ে ও ধান খেতের আল দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় ফলাফল ভালো হওয়া সত্ত্বেও বিদ্যালয় দুটিতে শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও কমে যাচ্ছে। 

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে ১৯৪৩ খ্রিষ্টাব্দে চলবল খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ১৯৯৭ খ্রিষ্টাব্দে দক্ষিণ চলবল খাঁ উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। বিদ্যাপীঠ দুটি দ্রুত এলাকার শিক্ষার বাতিঘর হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠে। দক্ষিণ চলবল খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ে বর্তমানে আছেন দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও ১৩ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী। পাশেই রয়েছে দক্ষিণ চলবল খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। যার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২১ জন। শিক্ষক রয়েছেন ৫ জন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না হওয়ায় এসব স্কুলের অনেক শিক্ষার্থী অন্য এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হচ্ছেন। 

দক্ষিণ চলবল খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সংগীতা বাড়ৈ, রুদ্র ভক্ত, প্রান্তি বিশ্বাস, শিবু জয়ধর ও  প্রত্যাশা বাড়ৈ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, বিদ্যালয়ে আসার রাস্তা না থাকায় বর্ষাকালে আমাদের নৌকায় করে স্কুলে আসতে হয়। অনেক সময় নৌকা থেকে পড়ে গিয়ে বই খাতা সব ভিজে যায়।

এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা ধীরেন্দ্র নাথ বাড়ৈ দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, আমাদের দুটি বিদ্যালয় ও এলাকায় যাতায়াতের জন্য যোগাযোগ অবস্থা খুবই খারাপ। জরুরি ভিত্তিতে রাস্তা নির্মাণ করা প্রয়োজন।

দক্ষিণ চলবল খাঁ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিজন চন্দ্র হালদার দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় আমাদের স্কুলে প্রতি বছরই শতভাগ পাস। এখানে অত্যন্ত মানসম্মত শিক্ষা দেয়া হয়। কিন্তু, যোগাযোগ ব্যাবস্থা ভালো না হওয়ায় একটি চারতলা ভবন বরাদ্দ হলেও তা বাতিল হয়ে যায়।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মিন্টু লাল বালা দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নবগ্রাম মিশন বাড়ি থেকে যে রাস্তাটি স্কুল পর্যন্ত আছে সেটি চলাচলের অনুপযোগী। সামান্য বর্ষাতেই ডুবে যায়। এ কারণে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষ অনেক ভোগান্তিতে আছেন।  

এ ব্যাপারে ডাসার উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রেজাউল করিম দৈনিক আমাদের বার্তাকে বলেন, নবগ্রাম থেকে সরকারবাড়ী পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের জন্য পদ্মা সেতু সংযোগ সড়ক প্রকল্পের ডিপিপিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদন পেলেই কাজ শুরু করা যাবে। 


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে - dainik shiksha জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারো ভর্তি পরীক্ষা চালু হবে সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ - dainik shiksha সরকারি-বেসরকারি স্কুলে ভর্তি: দুই দিনে আবেদন প্রায় দুই লাখ শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা - dainik shiksha শিক্ষক নিয়োগেও নামকাওয়াস্তে মনস্তাত্ত্বিক পরীক্ষা হয়: গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর - dainik shiksha এসএসসির ফরম পূরণ শুরু ১ ডিসেম্বর কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের গল্প কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক - dainik shiksha কওমি মাদরাসা একটি অসমাপ্ত প্রকাশনার কপিরাইট সত্ত্ব পেলেন লেখক পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের - dainik shiksha পাঠ্যপুস্তকে একক অবদান তুলে ধরা থেকে সরে আসার আহ্বান হাসনাতের ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ - dainik shiksha ৬ষ্ঠ ও ৮ম শ্রেণির বাদপড়া শিক্ষার্থীদের রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0029850006103516