স্কুলের জমি ক্রয়ের নামে অর্থ আত্মসাৎ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি |

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে স্কুলে জমি ক্রয়ের নামে পাঁচ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে। উপজেলার ছিপাতলী ইউনিয়নের ঈদগাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ দুর্নীতি আর লুটপাটের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে। এই স্কুলে জমি ক্রয়ের নামে পাঁচ লক্ষ টাকা তছরূপ করেন প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি।

এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানে আতঙ্ক ও সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। অর্থ তছরূপ ও দুর্নীতির কারণে আজ পর্যন্ত স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি বা সদস্যদেরকে বিচারের মুখোমুখি হতে হয়নি। আর পর্ষদ পক্ষে থাকা অধ্যক্ষকেও ন্যূনতম বেকায়দায়ও পড়তে হয়নি।

জানা যায়, স্কুল ম্যানেজিং কমিটি জমি ক্রয়ের নামে পাঁচ লাখ টাকা তছরূপ করেন। স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের অঙ্গীকার বায়না চুক্তিপত্রে লেখা রয়েছে ১৭২২, ১৭২৬ ও ১৭২৭ দাগাদীর আন্দর ১০ শতক জমি ক্রয়ের জন্য গত ১৫ই জানুয়ারি ১৯ সালে তিনশ’ টাকার ননজুডিশিয়াল স্টাম্পে সম্পাদিত দলিল মূলে স্কুল ম্যানেজিং কমিটি নুরুল আবেদীন নামক এক ব্যক্তিকে স্কুল ফান্ড থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা প্রদান করেন। আরও জানা যায়, এই জমির মূল মালিক অন্যজন। দীর্ঘ ৪ বছর পার হলেও জমি ও অর্থ কোনোটাই স্কুল কর্তৃপক্ষ বুঝে পায়নি।

জমির মালিক ফরিদা বেগম (৬৫) প্রকাশ জাহেদের মা বলেন, আমরা এই জায়গা কারও কাছে বিক্রি করিনি।

জসিম মুন্সী নামক এক ব্যক্তি আমার কাছ থেকে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে নেয়। কিন্তু ওই জমি আমরা স্কুল কমিটি বা অন্য কারও কাছে রেজিস্ট্রি করে দেইনি এবং জমি বাবদ কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। ঈদগাহ স্কুলের পাশে আমাদের জমিটি স্কুল কমিটি জোরপূর্বক মাটি ভরাট করতে চেয়েছিল। কিন্তু আমাদের বাধার মুখে ভরাট করতে পারেনি। এগুলো আমাদের মুরশী সম্পত্তি। জমিগুলো তারা নিজেদের দখলে নেয়ার জন্য গভীর ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে বলে জানান জাহেদের স্ত্রী রাশেদা আক্তার।
স্কুলের নামে জমি ক্রয়ে অর্থ তছরূপের বিষয়ে জানতে ঈদগাহ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজে যাওয়া হয়। ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. মতিয়ার রহমান সাংবাদিকদের দেখে উত্তেজিত হয়ে বলেন, এই আপনারা কারা, কোথায় থেকে আসছেন, এখানে কি? পরিচয় পেয়ে নিজেকে ব্যস্ততা দেখিয়ে স্কুল থেকে কেটে পড়েন। এদিকে মুঠোফোনে ওই অধ্যক্ষকে আর পাওয়া যায়নি।   

স্কুল ম্যানেজিং কমিটির তৎকালীন সভাপতি, গুমান মর্দন ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজিব বলেন, ঈদগাহ স্কুলের ম্যানেজিং কমিটিতে আমি সভাপতির দায়িত্ব পালনকালে নুরুল আবেদীন প্রকাশ জসিম মুন্সী স্কুলে জমি বিক্রয়ের নামে পাঁচ টাকা গ্রহণ করে। ওই সময় ‘স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়ের অঙ্গীকারে বায়না চুক্তিপত্র’ হয়েছিল। স্কুলের নামে ১০ শতক নাল জমি ১০ লাখ টাকা মূল্যে ধার্য্য করা হয়। জমি বায়না চুক্তিপত্রের সময় জসিম মুন্সীকে স্কুল ফান্ড থেকে নগদ ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়েছিল। বাকি টাকাসহ জমি রেজিস্ট্রি করে দেয়ার কথা রয়েছে।

কিন্তু দীর্ঘ ৪ বছর পার হওয়ার পরেও তিনি স্কুলকে জমি রেজিস্ট্রি বা জমি বুঝিয়ে দিতে পারেনি। এতে আমার এবং স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন ও ৫ লাখ টাকা নষ্ট হয়েছে। আমি চাই বিষয়টি দ্রুত সমাধান হোক। স্কুল ম্যানেজিং কমিটিকে ওই জমির বায়নাদাতা ও স্কুল থেকে টাকা গ্রহণকারী ছিপাতলী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আবেদীন প্রকাশ জসিম মুন্সীকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ - dainik shiksha ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো - dainik shiksha দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা - dainik shiksha ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0060360431671143