নাটোরের বাগাতিপাড়ায় একটি বিদ্যালয়ের নলকূপের পানি পান করে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছে। তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ওই নলকূপের পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে বলে সন্দেহ করছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জিগরী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে কয়েকজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ের মাঠের পাশে থাকা নলকূপের পানি পান করতে যায়। তাদের মধ্যে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ক্ষিদ্রমালঞ্চি গ্রামের ইসরাত জাহান ওরফে মেঘলা (১৩) এবং তার সহপাঠী একই গ্রামের রহিমা খাতুন (১৪) পানি পান করে। বাকিরা পানি পান করতে গিয়ে পানিতে গন্ধ পায় এবং পানির রং সাদা দেখতে পায়।
বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ঘটনাটি উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগ, পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) অবহিত করেছেন। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের লোকজন বিদ্যালয়ে এসে টিউবওয়েলের পানির নমুনা সংগ্রহ করেন এবং পরীক্ষার জন্য নিয়ে যান।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমরা ওই বিদ্যালয়ের টিউবওয়েল পরিদর্শন করেছি। টিউবওয়েল থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে এনেছি। তবে স্থানীয়ভাবে পানিতে বিষ আছে কি না, তা পরীক্ষার ব্যবস্থা নেই। এ ঘটনায় মামলা হলে আমরা আলামত হিসেবে ওই পানি আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সরবরাহ করব। প্রাথমিকভাবে পানির গন্ধ ও রং দেখে মনে হচ্ছে, পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে। তাই টিউবওয়েলটি বন্ধ রাখা হবে।’
শিক্ষার্থীরা বিষয়টি বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জানায়। নলকূপটির পানিতে বিষ মেশানো হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করেন শিক্ষকেরা। ততক্ষণে পানি পান করা দুই শিক্ষার্থী অসুস্থবোধ করতে শুরু করে। তাৎক্ষণিক তাদের বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তারা সেখানে চিকিৎসাধীন ছিল।
চিকিৎসাধীন ছাত্রী ইসরাত জাহান বলে, ‘তৃষ্ণা মেটাতে কোনো কিছু না ভেবেই টিউবওয়েলের পানি খেয়ে ফেলি। পরে অন্য শিক্ষার্থীরা পানিতে বিষের গন্ধ বুঝতে পেরে আমাদের জানালে আমরাও ভয় পেয়ে যাই। অসুস্থবোধ করতে থাকি। তবে চিকিৎসা নেয়ার পর সুস্থ আছি।’
বাগাতিপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বরত চিকিৎসক কর্মকর্তা নিশাত তাসনীন বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ছাত্রীদের তাৎক্ষণিক ওষুধপত্র দেওয়া হয়েছে। তারা এখন সুস্থ আছে। তবে পর্যবেক্ষণের জন্য তাদের হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে।
জিগরী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান হোসেন বলেন, ‘খবর পেয়ে আমি ও অন্য শিক্ষকেরা টিউবওয়েলের পানি পর্যবেক্ষণ করেছি। বিষ মেশালে পানি যেমন সাদা রঙের হয়, টিউবওয়েলের পানির রং তেমনটাই হয়েছে। সন্দেহ হওয়ায় আমরা বিষয়টি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে দিয়েছি। কেউ যেন ওই পানি পান না করে, তার ব্যবস্থা নিয়েছি।’
বাগাতিপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম খান জানান, ঘটনাটি শুনে তিনি বিদ্যালয়ে গিয়েছিলেন। বিদ্যালয় থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।