নীলফামারীর জলঢাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গড়ে উঠেছে চান্দা এবং নয়া বিড়ি নামে অনুমোদনহীন বিড়ি ফ্যাক্টরি। প্রভাব খাটিয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে এ ফ্যাক্টরির উৎপাদন কার্যক্রম। বিড়ি তৈরির জন্য তামাক গুড়া করার সময় চারদিকে তা ছড়িয়ে পড়ছে। এতে পাশে থাকা চেংমারী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড় শতাধিক শিশু শিক্ষার্থী ক্লাস বিঘ্নিত হচ্ছে। শিশুদের অনেকেই শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হচ্ছেন, বাকিরাও আছেন ঝুঁকিতে।
সরেজমিনে উপজেলার কৈমারী ইউনিয়নের বড়ঘাট বাজার সংলগ্ন চেংমারী মাঝাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে শিক্ষার্থীরা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে জানান, তামাকের গুড়া ধোঁয়ার মতো ছড়িয়ে ক্লাসে চলে আসে। তখন শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। ঠিকমতো ক্লাস করা যায় না। স্কুলের মাঠেও ওই সময় খেলাধুলা করা যায় না।
জানতে চাইলে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সাজেদা আখতার জাহান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ওই ফ্যাক্টরিতে তামাক গুড়া করার সময় তা ধোঁয়ার মতো চারদিকে ছড়িয়ে পরে। ফলে স্কুলে ক্লাস করতে শিক্ষার্থীসহ আমাদের খুবই কষ্ট হয়। গত বছর আমি তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছি। জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালককে একাধিকবার জানানোর পরও কোনো প্রতিকার পাইনি।
জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে জলঢাকা উপজেলায় বিড়ি ফ্যাক্টরির জন্য ছাড়পত্র নিতে কেউ আবেদন করেনি। কোনো বিড়ি ফ্যাক্টরিকে ছাড়পত্র দেয়াও হয়নি। তবে পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ছাড়াই দীর্ঘদিন যাবত প্রধান সড়ক এবং একটি সরকারি স্কুলের পাশে কিভাবে বিড়ি উৎপাদনের কার্যক্রম চালাচ্ছে তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
জানতে চাইলে চান্দা এবং নয়া বিড়ি ফ্যাক্টরির মালিক মাজেদুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেছি, তবে এখনো ছাড়পত্র হাতে পাইনি। আমি তামাকের গুড়ার মধ্যেই কাজ করি।
জানতে চাইলে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কমল কুমার বর্মন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ফ্যাক্টরি বন্ধ করার জন্য ইতোমধ্যে মালিককে দু’টি নোটিশ পাঠানো হয়েছে। ছাড়পত্র ছাড়া বিড়ি উৎপাদনের কার্যক্রম চালালে সরেজমিনে গিয়ে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু রেজওয়ানুল কবীর দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, সিগারেট খেলে যে রকম ক্ষতি হয়, ঠিক তেমনি তামাকের গুড়ার ধোঁয়ার কারণে ফুসফুসে ক্যান্সার হতে পারে। বিশেষ করে অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীর জন্য এ ধোঁয়া মারাত্মক ক্ষতিকর।
জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা শরিফা আকতার দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, যেহেতু এটি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর, সেহেতু সংশ্লিষ্ট ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হবে।