নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বদলগাছী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৭৫টি বেঞ্চ ও ৩০টি ঢেউটিন চুরি হয়েছে। এসব বেঞ্চ ও টেউটিন চুরির অভিযোগ উঠেছে স্কুলের দপ্তরি কাম প্রহরী আরমান হোসেন রুবেলের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় বদলগাছী থানায় মামলা হয়েছে।
বেঞ্চ ও টিন চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন দপ্তরি আরমান। কিন্তু বিদ্যালয়ের চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সানিয়া সারমীন বলছেন, দপ্তরি চুরির দায় স্বীকার করে লিখিত প্রত্যয়ন দিয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী সীমিত পরিসরে ক্লাস চলার সময় পঞ্চম শ্রেণি প্রতিদিন ক্লাস হতো দুপুর দেড়টা থেকে ৪টা পর্যন্ত। চতুর্থ ও তৃতীয় শ্রেণির সপ্তাহে দুইদিন সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১২টা পর্যন্ত এবং প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণি সপ্তাহে ১দিন ক্লাস হতো। এজন্য স্কুলের সব শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার হতো না। এই সুযোগ নিয়ে দপ্তরি কাম প্রহরী রুবেল বেঞ্চ ও ঢেউটিন চুরি করে। তিনি এর আগেও প্রতিষ্ঠানের ৬ টি ফ্যান চুরি করেছিলেন বলে জানান স্থানীয়রা।
স্কুলে চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সানিয়া সারমীন দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, ‘গত ১৬ জানুয়ারি স্কুলের ওই কক্ষগুলোর তালা খুলে দেখা যায় বেঞ্চ ও টিন নেই। প্রহরীকে জিজ্ঞেসা করলে সে চুরির কথা স্বীকার করে। তারপর আমার বাবা মারা যান। এ জন্যই কয়েক দিনপর ২২ জানুয়ারি ম্যানেজিং কমিটির মিটিং হয়। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে লিখিতভাবে জানানো হলে শিক্ষা অফিসার স্কুলে তদন্তে আসেন। এ সময় চুরির দায় লিখিতভাবে স্বীকার করেন দপ্তরি কাম প্রহরী রুবেল। এ বিষয়ে আমি থানায় মামলা দায়ের করেছি।’
ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আব্দুর রাজ্জাক দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, শিক্ষা অফিসারের নির্দেশে থানায় মামলা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা শিক্ষা অফিসার ফজলুর রহমান দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি তদন্ত করে দপ্তরি কাম প্রহরীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি। তার বিরুদ্ধে যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ইউসুফ রেজা দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, উপজেলা শিক্ষা অফিসারের মাধ্যমে জানার পর তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বদলগাছী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আতিকুল ইসলাম দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষক বাদি হয়ে সোমবার বিকেলে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। নেশা করায় দপ্তরি আরমানকে এর আগেও দুইবার গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযুক্ত এখন পলাতক আছে। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
যদিও মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে দপ্তরি কাম প্রহরী আরমান হোসেন রুবেল দৈনিক শিক্ষাডটকমকে বলেন, আমি এখন শ্বশুর বাড়িতে আছি। আমি টিন ও বেঞ্চ চুরি করিনি। তবে আগে ৬টি ফ্যান চুরির কথা স্বীকার করেন তিনি।