স্থবির দেশের বিচারব্যবস্থা

আদালত প্রতিবেদক |

শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর নিরাপত্তাহীনতায় স্থবির হয়ে আছে দেশের বিচার ব্যবস্থা। আদালতে কোন পুলিশ নেই। জেলখানা থেকে কোন আসামিকে আনা হচ্ছে না। থানার অবকাঠামো ধ্বংস, পুলিশ ভ্যান বিনষ্ট ও থানার কার্যক্রম শুরু না হওয়ায় কোন আসামি গ্রেফতার নেই। আদালতে আনাও হয় না। সুপ্রিমকোর্টে অস্থিরতা। ফলে কার্যত এক সপ্তাহ ধরে স্থবির হয়ে আছে দেশের বিচারব্যবস্থা। 

রোববার (১১ আগস্ট) ঢাকার আদালত সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, মহানগর দায়রা জজ আদালতসহ কয়েকটি আদালত এজলাসে উঠে বিচার কার্য পরিচালনা করলেও অন্যসব আদালত বিচারকের খাসকামরায় বসেই আদেশ দেন। কেউ কেউ এজলাসে উঠলেও ১৫ মিনিট থেকে আধাঘণ্টার মধ্যেই মামলা শেষ করে নেমে যান। 

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালত, ঢাকা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মিলিয়ে প্রায় ১০৭টি আদালত। বিচারাধীন মামলাগুলোতে সাক্ষির সময় আসামির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক হওয়ায় কারাগারে থেকে আসামি না আসায় কোন সাক্ষ্য গ্রহণ করা হচ্ছে না। আদালতগুলোতে শুধুমাত্র হাজিরা, সময়ের আবেদন ও জামিন শুনানি করা হচ্ছে। বিচারকরা আদালতে আসলেও এজলাসে উঠার দরকার হয় না। আর উঠলেও স্বল্প সময়ের জন্য উঠে আবার নেমে যান। 

পুরান ঢাকার ২টি জজশীপে ও ২টি ম্যাজিস্ট্রেটশীপে ১০৭ জন বিচারক কর্মরত আছেন। কিন্তু রোববারও তাদের নিরাপত্তায় কোনো পুলিশ চোখে পড়েনি। এমনকি চারটি হাজতখানাতেও কোনো পুলিশ ছিল না। সবই অরক্ষিত হয়ে পড়ে ছিল। বাইরের প্রধান ফটকে তালা দেওয়া। ঢাকা সিএমএম আদালতের হাজতখানা হচ্ছে দেশের ব্যস্ততম হাজতখানা। উক্ত হাজতখানার ওসি মুরাদ হোসেন আমাদের বার্তাকে বলেন, গত মঙ্গলবার থেকে ঢাকার সিএমএম হাজতখানাসহ ঢাকার নিম্ন আদালতে ৪টি হাজতখানার কোনটিতেই গত ৬ দিনে কোন আসামি আনা হয়নি। ঢাকার ৫০ থানার কোন থানা থেকেও কোন আসামি আনা হয়নি।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের সাবেক পাবলিক প্রসিকিউটর, ফৌজদারী আইন বিশেষজ্ঞ ও সিনিয়র আইনজীবী এহসানুল হক সমাজি আমাদের বার্তাকে বলেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ৩৬৩ ধারার বিধান মোতাবেক আসামির উপস্থিতি সাক্ষ্যগ্রহণ করতে হবে। সেক্ষেত্রে কারাগারে আটক আসামি আদালতে না আসায় বিচার বিলম্বিত হচ্ছে। এক্ষেত্রে বিচারপ্রার্থী ও আসামি উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, কোর্ট ও এর রেকর্ডপত্র, আইনজীবী চেম্বারে রক্ষিত রেকর্ডপত্র খুবই মূল্যবান। কোর্ট অঙ্গনে দীর্ঘসময় পুলিশ কিংবা অন্য কোন নিরাপত্তা সংস্থা না থাকায় এসব হুমকির সম্মুখিন। যত দ্রুত সম্ভব আদালতের নিরাপত্তায় পুলিশ কিংবা বিকল্প কোন নিরাপত্তা ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান তিনি। 

৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের পর গতকাল রোববার পর্যন্ত ঢাকার কোর্ট্ অঙ্গন দাপিয়ে বেড়ানো হেভিওয়েট আওয়ামীপন্থি আইনজীবী নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। ফাঁকা পেয়ে পুরো কোর্ট এলাকা দখল নেয় বিএনপি ও জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ - dainik shiksha ইউএনওর ‘মানসিক নির্যাতনে’ শিক্ষকের মৃত্যুর অভিযোগ শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর - dainik shiksha শিক্ষা ক্যাডারে পদোন্নতির সভা ১৮ সেপ্টেম্বর সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! - dainik shiksha সেই অভিযুক্ত রেবেকাই এবার মাউশি ঢাকার ডিডি! নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! - dainik shiksha নাহিদ-দীপুর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিই মাউশি অধিদপ্তরের ডিজি হচ্ছেন! শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর - dainik shiksha শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু প্রতিরোধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- জানতে চায় অধিদপ্তর এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস - dainik shiksha এক ফ্যাসিস্টকে দেশ ছাড়া করেছি অন্যকে সুযোগ দেয়ার জন্য নয়: সারজিস কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0048568248748779