স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে ৪৪ হাজার কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে আইএমএফ

দৈনিকশিক্ষা প্রতিবেদক |

আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলোকে বৈশ্বিক মন্দা মোকাবিলায় প্রচলিত সহায়তার অতিরিক্ত হিসাবে আরও ৪৪ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেবে। আগামী তিন বছরের মধ্যে এ ঋণ দেয়া হবে। 

সদস্য দেশগুলো বৈদেশিক লেনদেনের ভারসাম্যে স্থিতিশীলতা রক্ষায় ঋণের অর্থ ব্যয় করতে পারবে। সোমবার প্রকাশিত আইএমএফের এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে আন্তর্জাতিক বাজারে সব ধরনের পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। এসব পণ্য আমদানিতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর ব্যয় বেড়ে গেছে মাত্রাতিরিক্তভাবে। 

এছাড়া উন্নত দেশগুলোতে খাদ্য মূল্যস্ফীতির হার লাগামহীনভাবে বেড়ে যাওয়ায় তারা সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি অনুসরণ করে। এতে ওইসব দেশে ঋণের সুদের হার বেড়ে যায়। ফলে ডলারের দাম বৃদ্ধি পেয়ে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন ঘটে। এতেও স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রায় চাপ পড়ে। সার্বিকভাবে তাদের রিজার্ভ কমে যায়। 

বৈদেশিক মুদ্রার ব্যালেন্স অব পেমেন্টে ঘাটতি দেখা দেয়, যা স্বল্পোন্নত দেশগুলোতেও মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেয়। 

এ অবস্থায় উন্নত দেশগুলো সুদের হার বাড়িয়ে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে পরিস্থিতি অনেকটা সামাল দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলো এখনো পরিস্থিতিতে নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেনি। তারা চেষ্টা করে যাচ্ছে। 

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ না হলে ইউরোপের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে সংস্থাটি। 

এদিকে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বেশির ভাগেরই রপ্তানির বড় বাজার হচ্ছে ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্র। এসব দেশের অর্থনীতি স্বাভাবিক না হলে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর রপ্তানি বাজার চাঙ্গা করা কঠিন হবে। রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রেও ওইসব দেশ নির্ভরশীল। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্য ও বিভিন্ন দেশ থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ রয়েছে স্বল্পোন্নত দেশগুলোতে। 

ওইসব দেশেও মন্দার নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তারা মূল্যস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণে মুদ্রার প্রবাহ কমিয়েছে। ফলে সার্বিকভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে গেছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ, মুদ্রার মান ধরে রাখা। বৈদেশিক মুদ্রার সংকটের কবলে পড়ে তারা মুদ্রার মান ধরে রাখতে পারছে না। এতে ডলারের দাম বেড়ে যাচ্ছে। ফলে মূল্যস্ফীতিতেও চাপ বাড়ছে। স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে অনেক দেশের মূল্যস্ফীতির হার দুই ডিজিটে চলে গেছে। 

আইএমএফের প্রতিবেদনে বলা হয়, স্বল্পোন্নত দেশগুলো কঠিন শর্তের কম সুদের ঋণ না নিয়ে চড়া সুদের কম শর্তেও বাণিজ্যিক ঋণ নিয়েছে বেশি। ওইসব ঋণ স্বল্পমেয়াদি হওয়ায় এগুলো পরিশোধে এখন রিজার্ভের ওপর চাপ পড়েছে। ওইসব ঋণ এখন তারা পরিশোধ না করে মেয়াদ বাড়িয়ে নিচ্ছে। 

এতেও ঋণের ওপর বাড়তি চাপ পড়বে, যা আগামীতে স্বল্পোন্নত দেশগুলোর বৈদেশিক মুদ্রার ওপর চাপ আরও বাড়িয়ে দিতে পারে। যে কারণে আইএমএফ আরও ৪৪ হাজার কোটি ডলার ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এসব ঋণে অনেক শর্ত থাকবে। যেসব শর্ত বাস্তবায়নের ফলে ওইসব দেশের অর্থনীতি সঠিক ধারায় ফিরে আসবে। 

এদিকে বিদ্যমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ আইএমএফের কাছে ৪৫০ কোটি ডলারের ঋণ চেয়েছে। ওইসব ঋণ দেয়ার ব্যাপারে আইএমএফ বেশ কিছু শর্ত আরোপ করেছে। ওইসব শর্ত নিয়ে সংস্থাটির সঙ্গে এখনো আলোচনা চলছে।


পাঠকের মন্তব্য দেখুন
ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ - dainik shiksha ঢাবি-জাবিতে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার দুঃখ প্রকাশ সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স নিয়ে যা বললেন সারজিস পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা - dainik shiksha পিটিয়ে হত্যার আগে সেই ব্যক্তিকে ভাত খেতে দিয়েছিলেন ঢাবি শিক্ষার্থীরা দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো - dainik shiksha দ্বাদশ শ্রেণির বিষয়-গ্রুপ পরিবর্তনের সময় বাড়লো ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা - dainik shiksha ঢাবিতে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব - dainik shiksha সরকারি চাকরিতে প্রবেশের বয়স ৩৫ করার প্রস্তাব দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে - dainik shiksha দৈনিক শিক্ষার নামে একাধিক ভুয়া পেজ-গ্রুপ ফেসবুকে কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে - dainik shiksha কওমি মাদরাসা: একটি অসমাপ্ত প্রকাশনা গ্রন্থটি এখন বাজারে please click here to view dainikshiksha website Execution time: 0.0056638717651367