দৈনিক শিক্ষাডটকম প্রতিবেদক : স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন বক্তারা। বৃহস্পতিবার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সেমিনার হলে স্বাধীনতার ঘোষাণাপত্রের ৫৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র: স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানের সৃষ্টিতত্ত্ব’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় এ দাবি জানানো হয়।
ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র সভাপতি শাহরিয়ার কবিরের সভাপতিত্ব সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা ও মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী সিমিন হোসেন (রিমি)।
সিমিন হোসেন স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ ব্যাখ্যা করে বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র এবং মুজিবনগর দিবস সম্পর্কে নতুন প্রজন্মের অনেকে কিছুই জানেন না। তাদেরকে বাংলাদেশের অভ্যুদয়কালের এই গুরুত্বপূর্ণ ইতিহাস জানাতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত না করা হলে আগামী প্রজন্মকে সচেতন করা যাবে না।
দেশপ্রেম কোনো বিমূর্ত বিষয় নয়। প্রতিদিনের কাজ ও দায়িত্ব নিষ্ঠার সাথে পালন করার নাম হচ্ছে দেশপ্রেম। আমরা কোথা থেকে শুরু করেছি এবং দেশকে কোথায় রেখে যাচ্ছি এই উত্তরণই হচ্ছে দেশপ্রেম, যোগ করেন তিনি।
শাহরিয়ার কবির বলেন, ১৯৭১-এর ১০ এপ্রিল মুজিবনগর থেকে বাংলাদেশের ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ ঘোষণা করা হয়, যার খসড়া রচনা করেছিলেন ১৯৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী জাতীয় সংসদের সদস্য ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম। এই ঘোষণাপত্রের ভিত্তিতে ১০ এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপরাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দীন আহমেদকে প্রধানমন্ত্রী করে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম সরকার গঠিত হয়।
তিনি আরো বলেন, ১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশের মূল সংবিধান কার্যকর হওয়ার আগে পর্যন্ত ‘স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র’ই ছিলো কার্যত বাংলাদেশের সংবিধান। যে কারণে দেশের সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে এই ঘোষণাপত্রকে বলা হয়েছে সংবিধানের ‘জেনেসিস’ বা সৃষ্টিতত্ত্ব।
আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন করেন মুক্তিযুদ্ধের ৮ নং সাব-সেক্টর কমান্ডার ও মুজিবনগর সরকারের শপথ অনুষ্ঠানের গার্ড অব অনার প্রদানকারী সাবেক এসপি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব উদ্দিন আহমদ বীরবিক্রম, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী দক্ষিণ এশীয় গণসম্মিলনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষাসংগ্রামী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী মানবাধিকার নেত্রী আরমা দত্ত, ১৯৭১: গণহত্যা-নির্যাতন আর্কাইভ ও জাদুঘর ট্রাস্ট-এর সভাপতি ইতিহাসবিদ অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন এবং নির্মূল কমিটির সহসাধারণ সম্পাদক শহীদসন্তান অধ্যাপক ডা. নুজহাত চৌধুরী।
আলোচনা সভায় বক্তারা স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র প্রদানের ঐতিহাসিক দিন ১০ এপ্রিলকে প্রজাতন্ত্র দিবস হিসেবে উদযাপনের জন্য সরকারের নিকট দাবি জানান। এ আলোচনা সভা সঞ্চালনা করেন নির্মূল কমিটির আইটি সেলের সভাপতি শহীদসন্তান নাট্যজন আসিফ মুনীর।